রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের দালাল আইনে মামলা করা হয়েছিল তাদেরকে রাজাকার আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্য হিসাবে চিহ্নিত করে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
কিন্তু এই রাজাকারের তালিকায় ঢুকে গেছে গেজেটেড এক মুক্তিযোদ্ধার নাম! তিনি হলেন তপন কুমার চক্রবর্তী। ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্ঠা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন। অথচ প্রকাশিত বরিশাল বিভাগের রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৩ নম্বরে রয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তপন কুমার চক্রবর্তীর মেয়ে ডা. মনীষা চক্রবর্তী।
তিনি লিখেন, ‘মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে। আমার বাবা এড. তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্ঠা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও পেয়ে থাকেন! আজ রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৩ নাম্বার রাজাকার।’
‘আমার ঠাকুরদা এড সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তার সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
‘শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগ সরকারকে। আমার দল বাসদ আমাকে শিখিয়েছে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করাকে। মিছিল থেকে গ্রেফতার করে থানায় নির্যাতন করে ওরা বলেছিল যে আন্দোলন যেন না করি, নির্বাচনে যেন অংশ না নিই। রাজী না হওয়ায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে অজামিনযোগ্য মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ করেছে। আমরা জেল খেটেছি, নির্যাতন সহ্য করেছি কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি।’
‘ভয় দেখিয়ে বা বিপদে ফেলে আমাদের কিছু করা যাবে না। অভুক্ত, অর্ধভুক্ত গরীব খেটে খাওয়া মানুষ আছে আমাদের দলের সাথে। আছে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। অতীতের মতো আজ এবং আগামীতে আপনাদের পাশে পাবো সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।’
রাজাকারের প্রকাশিত তালিকা থেকে নেওয়া।