রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা খুলে দেওয়া ও মাহমুদুর রহমান এর সাজা বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন কাউখালীতে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফিসের সময়সূচী মানছে না বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এমাদুলের পরিবারকে ভাণ্ডারিয়া বিএনপি’র আর্থিক সহায়তা প্রদান ভান্ডারিয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গণ সমাবেশ কাউখালীতে সমুদ্রগামী মৎস্যজীবীদের মাঝে চাল বিতরণ ভান্ডারিয়ায় পুত্রবধূর দায়ের কোপে শ্বশুরের মৃত্যু গণ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে এ দেশের মাটিতে এনে ফাঁসির দাবী ভাণ্ডারিয়া সংবর্ধনা সভায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ভান্ডারিয়ায় বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছে গুলিবিদ্ধ নাঈম কাউখালীতে দেয়ালে দেয়ালে রং তুলির আঁচড়ে নতুন দেশের ছবি ইন্দুরকানীতে সাংবাদিকের মাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুট  ভান্ডারিয়ায় বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত কাউখালীতে ছাত্রদলের মিছিল সমাবেশ কাউখালী থানা পুলিশকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করলেন উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ৯ বছর পর দেশে ফিরলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন ভবিষ্যতে রাজনীতি করা অনেক কষ্টকর হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিরোজপুরে নিজের ঘর থেকে কৃষকের হাত পা বাধা মরদেহ উদ্ধার ভান্ডারিয়ায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পুনর্বাসিতদের প্রশিক্ষণ কোর্স এর উদ্বোধন কাউখালীতে অংশীজনের অংশগ্রহণে মৎস্য সম্পদের স্থায়িত্বশীল এবং সর্বোত্তম ব্যবহার বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হারুনকে ডিবি থেকে বদলি ভান্ডারিয়ায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন
মহাস্থানগড়ে আড়াই হাজার বছর আগের বাণিজ্যিক কেন্দ্রের সন্ধান

মহাস্থানগড়ে আড়াই হাজার বছর আগের বাণিজ্যিক কেন্দ্রের সন্ধান

বগুড়ার মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে বেরিয়ে এসেছে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। সেইসঙ্গে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয়াব্দ থেকে শুরু করে মুসলিম শাসনামলের সমৃদ্ধ প্রত্ন সামগ্রীও পাওয়া গেছে এবারের খননে। সেখান থেকে প্রাপ্ত প্রত্ন সামগ্রী নিশ্চিত করেছে মহাস্থানগড় প্রাচীন যুগেও ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে ছিলো সমৃদ্ধ। প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরী ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান মহাস্থান গড়ে বাংলাদেশ-ফ্রান্স যৌথ খননকালে এসব নিদর্শনের সন্ধান মেলে। গত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে খনন কাজ শুরু হয়েছে মহাস্থানগড়ে।

মহাস্থানগড় ঐতিহাসিকস্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে খনন করা হয়েছে। খননের বিভিন্ন পর্যায়ে এখানে বেরিয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রত্ননিদর্শন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা করে আসছে। পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নেও প্রত্নতাত্ত্ব অধিদপ্তর খনন পরিচালনা করছে। এবারও গড়ের বৈরাগীর ভিটার ৫টি স্থানে শুরু হয় খনন কাজ। এরমধ্যে ফ্রান্স দল ৩টি এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দুটি স্থানে খনন কাজ পরিচালনা করে।

বৈরাগীর ভিটায় ২০১৭ সালে খননের পর প্রায় এক হাজার ৩০০ বছর আগে নির্মিত তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরের নিদর্শন মেলে। এবার ওই খননস্থানের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে খনন করা হয়। খননকালে যেসব প্রত্ন নিদর্শন মিলেছে তা থেকে ধারণা করা হচ্ছে বৈরাগী ভিটার এই জায়গাটি কোনো বাণিজ্যিক কেন্দ্র অথবা খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্র ছিলো। কারণ খননকালে পাশাপাশি এই ৫টি জায়গায় মোট ৮টি কূপের সন্ধান মিলেছে। সেই সঙ্গে পাওয়া গেছে বেশকিছু মৃৎ পাত্র, মৃৎ পাত্রের ভগ্নাংশ, মাটির বিশালাকায় একটি ডাবর (মটকা)।

এতে খনন দলের সদস্যরা ধারণা করছেন, জায়গাটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। খনন স্থলে প্রাপ্ত স্থাপত্য কাঠামো এবং উত্তরাঞ্চলীয় উজ্জ্বল চকচকে কালো মৃৎপাত্র (এনবিপিডাব্লিউ) দেখে খনন সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন এসব খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয়াব্দ অর্থাৎ মৌর্য আমলের। সেই হিসেবে খনন থেকে প্রাপ্ত ও উন্মোচিত প্রত্নসামগ্রী প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন।

গত ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া যৌথ খননে ফ্রান্সের পক্ষে দল নেতা ছিলেন কলিন লেফ্রাংক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফ্রান্সের এলবো ফ্রাংকোয়িস ও আতোয়ান। বাংলাদেশ দলের পক্ষে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. নাহিদ সুলতানার সঙ্গে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান, শাহজাদপুর জাদুঘরের কস্টোডিয়ান মোহাম্মদ যায়েদ, মহাস্থান জাদুঘরের কস্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানা, সিনিয়র ড্রাফসম্যান আফজাল হোসেন, আলোকচিত্রী আবুল কালাম আজাদ ও সার্ভেয়ার মুর্শিদ কামাল ভূঁইয়া।

খনন দলের সদস্য মোহাম্মদ যায়েদ জানান, এবার যেসব কূপের সন্ধান মিলেছে তার মধ্যে একটি কূপ একেবারেই ব্যতিক্রম। ইতিপূর্বে যতো খনন পরিচালিত হয়েছে সেসব খননে কোথাও ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপের সন্ধান মেলেনি। কিন্তু এবারই প্রথম তেমন একটি কূপের সন্ধান মিলেছে বৈরাগীর ভিটায়। এই কূপের প্রায় ৬ ফুট গভীর পর্যন্ত তারা এবার খনন করে ৪৬ সারি ইটের গাঁথুনি উন্মোচন করেছেন। এ ছাড়া অন্য ৭টি পাতকূয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপটি সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দী অর্থাৎ পাল আমলের। অন্যান্য কূপও সমসাময়িক সময়ের। সেই হিসেবে প্রায় ১৩০০ বছর আগে এই অঞ্চলে ইটের গাঁথুনি বিশিষ্ট কূপ থেকে মানুষ পানি সংগ্রহ করেছে।

মহাস্থান জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানা বলেন, মহাস্থানগড়ের প্রাচীনত্ব বিশ্ব স্বীকৃত। সেই স্বীকৃতির নিদর্শনই প্রতি বছরের খননকাজে উন্মোচিত হচ্ছে। সেখানে যেসব প্রত্নবস্তুর নমুনা মিলেছে তা প্রমাণ করে খ্রিষ্টের জন্মের পূর্বেও এই জনপদ ছিলো সমৃদ্ধ।

তিনি জানান, এবার খননে সেখানে পোড়ামাটির গুটিকা, মৃৎপাত্র, নকশা করা ইটসহ আরো অন্যান্য নিদর্শন মিলেছে। তিনি বলেন, খনন কাজ এখন শেষ পর্যায়ে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে খনন স্থলগুলো সংরক্ষণের জন্য মাটি ভরাট করে রাখা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019 pirojpursomoy.com
Design By Rana
error: Content is protected !!