রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
রাজবাড়ীতে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও রাজবাড়ী প্রতিনিধি’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজবাড়ীর দুই নম্বর আমলি আদালতে মো. রাকিবুল ইসলাম রাইস এই মামলা দায়ের করেন। রাইস জেলার পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং একই ইউনিয়নের মাছপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
মামলায় দৈনিক কাল কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনকে তিন নম্বর, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামালকে দুই নম্বর ও রাজবাড়ী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেনকে এক নম্বর আসামি করা হয়। আদালতের বিচারক লাবনী আক্তার পরবর্তীতে এই বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খান মো. জহুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় লিখিত বিবরণে বলা হয়, এক স্কুল ছাত্র গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় উদ্দেশ্য মূলকভাবে প্রয়াত এমপি খন্দকার নুরুল ইসলামের আপন ভাতিজা ছাত্রলীগ নেতা সিসিলকে জড়িয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ২২ ডিসেম্বর ‘ছাত্রলীগ নেতার হাত থেকে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গুলিবিদ্ধ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ সম্পর্কে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পাশাপাশি এ অঞ্চলের হাজার হাজার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মর্মাহত ও ব্যথিত হয়েছে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের ভাবমূতি ও সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদ অসত্য, ভিত্তিহীন ও সম্মানহানিকর। এ জাতীয় খবরে বাদী ও তার দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার দিন দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকা প্রকাশ করে মাছপাড়া বাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিলি বণ্টন ও প্রচার করে পাঁচ কোটি টাকার সুনাম নষ্ট করেছে।
এই বিষয়ে কালের কণ্ঠের রাজবাড়ী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছাত্রলীগ নেতার হাত থেকে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গুলিবিদ্ধ শিরোনামে একটি সংবাদ কালের কণ্ঠে পাঠানোর পূর্বে প্রত্যক্ষদর্শী ও গুলিবিদ্ধ আজিম উদ্দিনের বাবা আজু মন্ডলের বক্তব্য নিতে মুঠোফোনে কথা বলেন তিনি। পরে আজু মন্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলার পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার তানবীর হাসান সিসিল’র সঙ্গেও ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সিসিলের ফোন বন্ধ থাকায় তিনি তার বাবা খন্দকার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন।
উভয় বক্তব্য রাজবাড়ী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে রেকর্ড আকারে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিউজটি করা হয়েছে। নিউজে আমার নিজস্ব কোনো বক্তব্য প্রদান করা হয়নি। দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছে তা হয়রানিমূলক।
এদিকে, রাজবাড়ীতে দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও জেলা প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মৌন মিছিল, স্বারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
মামলা করায় জেলা আওয়ামলী লীগের সহ-সভাপতি, রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি ও সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজবাড়ী একটি ছোট জেলা। আর এখানে একটা অন্যায় হবে তার প্রতিবাদ করা যাবে না, লেখা যাবে না; এটাকে আমি কখনো সমর্থন করি না।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল জব্বারও এনিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা হলো সমাজের বিবেক, অন্যায় দেখলেই নিউজ করতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে।