মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ১২:১৬ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক।।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর আকলিমা (২৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। ঘটনার সাতদিন পর বুধবার (১ জানুয়ারি) আদালতে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য প্রকাশ্যে আসে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার উচাইল বাজারে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি আনোয়ার হোসেনকে (২৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন উচাইল গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে ও পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী জানান, বুধবার দুপুরে আসামি আনোয়ারকে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে পাঠানো হলে তিনি ঘণ্টাব্যাপী সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
আসামি আনোয়ার জানান, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার জাম্বুরা চড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা আকলিমা আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয় তার। আকলিমা ঢাকার গাজীপুরে একটি গার্মেন্টে কাজ করতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। উভয়ই বিবাহিত ও সন্তান রয়েছে। বিষয়টি গোপন রেখেই গত ৪ মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে। পরবর্তীকালে বিষয়টি শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়।
এদিকে গত ২২ ডিসেম্বর তাদের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। এতে উভয়ের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। একপর্যায়ে আকলিমা আনোয়ারকে হুমকি দেয় যে তাকে বিয়ে না করলে গ্রামে এসে তাদের সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেবে। এরই জেরে আনোয়ার তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কৌশলে আকলিমাকে তার বাড়িতে আসতে বলেন আনোয়ার।
তার কথা মতো গত ২৩ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে এনা পরিবহনের বাসে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে রওয়ানা হয়ে রাত ১২টার দিকে অলিপুর এসে আনোয়ারের সঙ্গে তার বাড়িতে যায় আকলিমা। পরে পরিবারের অগোচরে আকলিমাকে নিয়ে রাত্রিযাপন করেন আনোয়ার। এরপর ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে আকলিমাকে কৌশলে বাড়ির পাশের একটি ঝোপের ভেতর নিয়ে যান। সেখানে আকলিমার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আনোয়ার।
ওসি মাসুক আলী বলেন, পরদিন ২৫ ডিসেম্বর রাতে পুলিশ আকলিমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় আকলিমার বড় ভাই আমির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরপরই এটিকে হত্যা বলে সন্দেহ করে পুলিশ। পরে মরদেহের কাছ থেকে পাওয়া এনা পরিবহনের বাসের টিকিট ও মুঠোফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে ঘাতক আনোয়ার হোসেনকে শনাক্ত করা হয়।