বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
একদিকে সরকার দেশের নদ-নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছে অন্যদিকে তার বিপরীতে চলমান নদীর মধ্যে কালভার্ট নির্মাণ করে অভিনব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মানুষের চলাচলের রাস্তা তৈরি না করে কেবল ব্যক্তিস্বার্থে চলমান নদীর মধ্যে কালভার্ট নির্মাণ করে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা অপচয়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে উল্লাপাড়ার ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
নির্মিত ওই কালভার্টটি জনগণের কোনও কাজে লাগা দূরের কথা উল্টো এতে ওই নদী পথে স্বাভাবিক নৌ চলাচল ব্যহত হচ্ছে। অভিনব এমন উন্নয়ন হয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলার বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়নের সৈয়দপুর পাঙ্গাসী কবরস্থানের পাশে বিল সূর্য শাখা নদীতে।
জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এলজিএসপি-২ প্রকল্পের আওতায় বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই কালভার্টটি নির্মাণ করে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির লিটন। স্থানীয়রা জানান, ওই নদীর ওপারে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি থাকায় তিনি রাস্তা নির্মাণ না করেই কালভার্ট নির্মানের উদ্যোগ নেন। কালভার্টটি নদীর মধ্যে স্থাপন করে এরপর আর সেখানে মানুষের চলাচলের জন্য কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। এতে কালভার্টটি মানুষের চলাচলের কোনো কাজেই আসছে না। অথচ ব্যক্তি সুবিধার্থে ইউপি চেয়ারম্যান অপরিকল্পিত এমন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নামে সরকারি কোষাগারের ২ লক্ষাধিক টাকা পানিতে ফেলে দিয়েছেন। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিল সূর্য নদীর শাখা খালে কোনো রাস্তা ছাড়াই পানির মধ্যে অপরিকল্পিতভাবে এই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর দুপাশে কোনো রাস্তা তৈরি করা হয়নি। বর্তমানে কালভার্টটির চারিদিকে পানি ও কাঁদায় পরিপূর্ণ। নদীটির পাড় দিয়ে এলজিইডি থেকে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। নদী ভাঙন থেকে রাস্তাটি রক্ষায় এর একপাড় ব্লক দিয়ে ভাঙন রোধ করা হয়েছে। এখানে কালভার্ট নির্মাণ করায় নৌকা চলাচল ব্যহত হয়। চলমান নদীর মধ্যে কী উদ্দেশ্যে এভাবে কালভার্ট নির্মাণ করা হলো তা স্থানীয়দের বোধগম্য নয়।
চলমান নদীর ভিতর কালভার্ট স্থাপন প্রসঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বড়পাঙ্গাসী ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির লিটন উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি ইউপি চেয়ারম্যান। কোথায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে না হবে, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনি যা দেখেছেন তাই লিখতে পারেন।’
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, অপরিকল্পিতভাবে চলমান নদীর মধ্যে কালভার্ট নির্মাণ করার বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক সত্যতা পেলে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ প্রকল্পের অর্থ ফেরত নেওয়া হবে।’
সুত্র. দৈনিক ইত্তেফাক