সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
শেখ হাসিনার ক্ষমতা শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি- শামীম সাঈদী ‎পিরোজপুরে কোটি টাকার মাদকসহ ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার ভাণ্ডারিয়ায় নুরুল ইসলাম মনজুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প কাউখালীতে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুইজন গুরুতর আহত পিরোজপুরে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আগুন ভাণ্ডারিয়ায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুইজন আটক মাদকসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার কাউখালীতে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার সুপার দেলোয়ার হোসাইন এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ ভাণ্ডারিয়ায় ওয়াল্ড ভিশনের শিশু শ্রম ও শিশুবিবাহমুক্ত উপজেলা গঠনে অগ্রগতি ও পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি শোধনাগার আড়াই মাস বন্ধ! তথ্য চাইলে সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ কাউখালীতে নাশকতার মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেফতার কাউখালীতে দুইটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালতের এজলাস স্থাপনা করা হয়েছে পিরোজপুরে জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খানকে বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন ইন্দুরকানীতে প্রেমিকের আশ্বাসে ধর্ম পরিবর্তন, ৯ দিনের অনশনের পর সম্পন্ন হলো বিয়ে ভান্ডারিয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো ১৬২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি ভাণ্ডারিয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় বনজীবিদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা অনুষ্ঠিত ভাণ্ডারিয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কাউখালীতে পাঁচ দিনব্যাপী রাস উৎসব শুরু পিরোজপুর-০২ আসনে আহমেদ সোহেল মনজুর সুমন পেলেন ধানের শীষ প্রতীক কাউখালীতে পিঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা
যে অভ্যাসে মানুষ মুনাফিক হয়

যে অভ্যাসে মানুষ মুনাফিক হয়

মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজাঃ

মুখে মধু মনে বিষ, গিরগিটির মতো ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো মানুষগুলোকে আমরা মুনাফিক বলে থাকি। এরা খুব চালাক প্রকৃতির হয়। ফলে এদের জালে আটকা পড়ে থাকতে হয় সরলমনা মুমিনদের। এরা সব সময় মানুষকে ব্যবহার করে, কিন্তু কখনো কারো কল্যাণে কাজ করে না। উপরন্তু সুযোগ পেলেই মানুষের ক্ষতি করে বসে। মহান আল্লাহ এ ধরনের লোকদের পছন্দ করেন না। এদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। আর তুমি কখনো তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী পাবে না।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪৫)

এ ছাড়া এমন অনেক অভ্যাস আছে, যেগুলোকে পবিত্র কোরআন-হাদিসে মুনাফিকদের অভ্যাস বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে নিম্নে সে রকম কিছু অভ্যাস তুলে ধরা হলো।

নামাজে অলসতা : নামাজে অলসতা ও লোক দেখানো নামাজ—এ দুটিকেই কোরআনের ভাষায় মুনাফিকের অভ্যাস বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। আর (আল্লাহ) তিনি তাদের ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা নামাজে দাঁড়ায় তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, তারা লোকদের দেখায় এবং তারা আল্লাহকে কমই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪২)

জামাতে অংশগ্রহণ না করা : যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া জামাত তরক করাকেও সাহাবায়ে কেরাম মুনাফিকের আলামত বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমরা মনে করি যার মুনাফিকি সর্বজনবিদিত এমন মুনাফিক ছাড়া কেউ-ই জামাতে নামাজ আদায় করা ছেড়ে দেয় না। অথচ রাসুল (সা.)-এর যুগে এমন ব্যক্তি জামাতে উপস্থিত হতো যাকে দুজন মানুষের কাঁধে ভর দিয়ে এসে নামাজের কাতারে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হতো। (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৪)

দ্বিমুখী আচরণ : আমাদের সমাজে মানুষের মতো দেখতে এমন কিছু প্রাণী আছে, যারা সব মহলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ঘন ঘন রং বদলায়। সবার কাছে মহৎ সাজতে চায়। মূলত তারা এভাবেই মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে। রাসুল (সা.)-এর যুগেও এমন মুনাফিক ছিল। মহান আল্লাহ বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন তারা তোমাদের নিকট আসে, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি। অথচ অবশ্যই তারা কুফরি নিয়ে প্রবেশ করেছে এবং তারা তা নিয়েই বেরিয়ে গেছে। আর আল্লাহ সে সম্পর্কে জ্ঞাত, যা তারা গোপন করত।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৬১)

বাচাল হওয়া : বাকপটু লোকদের সব কথা বিশ্বাস করতে নেই। এটি নিফাকের একটি শাখা মাত্র। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘লজ্জা, সম্ভ্রম ও অল্প কথা বলা ঈমানের দুটি শাখা। অশ্লীলতা ও বাকপটুতা (বাচালতা) নিফাকের (মুনাফিকির) দুটি শাখা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০২৭)

অশ্লীলতা পছন্দ করা : বর্তমান যুগে আমরা নিজেরাই অনেক অশ্লীল কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছি। কিছু কিছু বিষয় এমন হয়ে পড়ছে যে আমরা সেগুলোকে গুনাহই মনে করছি না। অথচ অশ্লীলতা পছন্দ করা মুনাফিকের অভ্যাস। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীরা একে অপরের অংশ, তারা মন্দ কাজের আদেশ দেয় আর ভালো কাজ থেকে নিষেধ করে, তারা নিজেদের হাতগুলোকে সংকুচিত করে রাখে। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে; ফলে তিনিও তাদের ছেড়ে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই মুনাফিকরা হচ্ছে ফাসিক।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৬৭)

মিথ্যা বলা : গুছিয়ে মিথ্যা বলা মানুষগুলো সবার প্রিয় হয়, আস্থাভাজন হয়। কিন্তু পবিত্র কোরআনে এদের মুনাফিক বলা হয়েছে, এদের থেকে সাবধান থাকা উচিত। এ রকম লোকদের ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর রাসুলকে সাবধান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তোমার কাছে মুনাফিকরা আসে, তখন বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসুল এবং আল্লাহ জানেন যে অবশ্যই তুমি তাঁর রাসুল। আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে অবশ্যই মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।’ (সুরা মুনাফিকুন, আয়াত : ১)

ধোঁকা দেওয়া : ধোঁকা মুনাফিকদের অভ্যাস। তারা সব সময় মানুষকে ধোঁকা দেবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘…তারা আল্লাহকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদের ধোঁকা দিচ্ছে। অথচ তারা নিজেদেরই ধোঁকা দিচ্ছে এবং তারা তা অনুধাবন করে না…।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৮-১০)

ওয়াদা ভঙ্গ করা : রাসুল (সা.) বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি : যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে, যখন সে ওয়াদা করে, তখন তা ভঙ্গ করে, আর যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় সে তা খিয়ানত করে। (বুখারি, হাদিস : ৬০৯৫)

আমানতের খিয়ানত : মুনাফিক লোকদের কাছে আমানত রাখা হলে তারা তা রক্ষা করে না। রাসুল (সা.) এই অভ্যাসকে মুনাফিকের চিহ্ন বলেছেন। (বুখারি, হাদিস : ৬০৯৫)

গান-বাজনায় মগ্ন থাকা : গান-বাজনা মানুষের অন্তরে মুনাফিকি সৃষ্টি করে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, পানি যেমন (ভূমিতে) তৃণলতা উৎপন্ন করে তেমনি গান মানুষের অন্তরে নিফাক সৃষ্টি করে। (ইগাসাতুল লাহফান (১/১৯৩, আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯২৭, তাফসিরে কুরতুবি : ১৪/৫২)। অনেকে বলেন, শর্তসাপেক্ষে গান গাওয়া জায়েজ। তাদের উদ্দেশে সবিনয়ে বলতে চাই, যেসব শর্তে গান জায়েজ সেসব শর্ত পালন করলে তাকে আমাদের পরিভাষায় গান বলে না, গজল, হামদ বা নাত ইত্যাদি বলে। ইদানীং কিছু কিছু গজলেও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে, সেগুলোকে শরিয়তের পরিভাষায় গজল বলে না, গানই বলে।

যে সুর মানুষের মনে অন্য রকম প্রভাব বিস্তার করে, মানুষকে আল্লাহর জিকির থেকে অমনোযোগী করে।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীতবিষয়ক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ লরেন স্টুয়ার্ট বলেন, যেসব গানের মেলোডি বা সুরের গঠন খুব সহজ-সরল, অর্থাৎ যে গানগুলোর তাল-লয় অথবা সুরের উত্থান-পতনের একটি সাধারণ প্যাটার্ন থাকে, সেগুলো আমাদের মস্তিষ্ক সহজেই গেঁথে নেয়। এই বিষয়টিকে সংগীতের ভাষায় বলা হয় ‘মেলোডিক আর্কস’। অর্থাৎ একটা সুরের বৃত্তে বাঁধা পড়া। (বিবিসি)

যাঁরা গান শোনেন, তাঁরা হরহামেশাই এর সম্মুখীন হন। অনেক সময় নিজের অজান্তে গুনগুন করে নিজেই সে গান গাইতে থাকেন। এভাবেই একজন মানুষ নিজের অজান্তেই সৃষ্টিকর্তাকে ভুলে সৃষ্টির প্রেমে ডুবে যায়। তার কল্পনায় বাসা বাঁধে দুনিয়ার রঙিন স্বপ্ন। গানের কথা অশ্লীল হলে মনও অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হয়।

আল্লাহ এ ধরনের কাজ থেকে আমাদের বিরত রাখুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত নসিব করুন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana