বানারীপাড়া প্রতিনিধি।
বানারীপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ২১৭ টাকা আত্মসাতের প্রমান পেয়েছে বিদ্যালয় নিরক্ষক কমিটি । বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক সহ প্রধান শিক্ষকক নুরুল আমিন’কে আহবায়ক করে , শিক্ষক মনিরুজ্জামান হাওলাদার, বেলা রানী মন্ডল,মো.সাইফুর রহমান’কে দিয়ে নিরক্ষক কমিটি গঠন করা হয় পরবর্তীতে শিক্ষক অলিউল ইসলাম ও শিরিন সুলতানা’কে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ছয়জন শিক্ষক দায়িত্ব পায়। তাদের নিরক্ষন রিপোর্ট অনুয়ায়ী দেখা যায় স্কুলের আয় ও ব্যায়ের পরে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ২১৭ টাকা উদ্বৃত্ত থাকার কথা অথচ এখানে প্রায় ২০ লাখ টাকার গরমিল রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ ১৪ বছরে বিদ্যালয়ের সার্বিক আয় ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার ৮ শত ১০ টাকা। এই একই সময়ে সার্বিক ব্যায় হয়েছে ৪৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩ শত ৩৯ টাকা এবং ঋন পরিশোধ ও ব্যাংকে জমা রয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার ২ শত টাকা । উদ্বৃত্ত্ব রয়েছে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ২ শত ১৭ টাকা। অথচ তবে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের রেজিষ্টার খাতায় কোন টাকা উদ্বৃত্ত নেই দেখানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নিয়মাবলীতে প্রতি বছর আয় -ব্যায়ের হিসাব নিরীক্ষণের কথা বলা থাকলেও প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান তা থেকে বিরত ছিলেন। বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকরা আয়-ব্যায়ের হিসাবের কথা বললে ওই শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক’র রোষানলে পরেছেন। অবশেষে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালে আয়-ব্যায়ের হিসাব নিরীক্ষণ করাতে বাধ্যহন প্রধান শিক্ষক। ২০১৯ সালের ২২ জুন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীণ আহবায়ক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন মাখন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নুরুল আমিনকে প্রধান করে মোট ৬ সদস্য বিশিষ্ট নিরীক্ষণ কমিটি গঠন করে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানকে নিরীক্ষণ কমিটির বরাবরে চিঠি ইস্যু করতে বলা হয়। তবে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানকে ২০১৯ সালের ২২ জুন নিরীক্ষণ কমিটিকে চিঠি ইস্যু করার নির্দেশ দিলেও সুচতুর প্রধান শিক্ষক ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর অর্থ্যাৎ ৭২ দিন পর চিঠি ইস্যু করেন। নিরীক্ষণ কমিটি বিদ্যালয়ের সার্বিক আয়ের হিসাব রশিদ বই ও ট্যালি খাতা ধরে এবং ব্যায়ের হিসাব ভাউচার ধরে আলোোচনা ও পর্যালোচনা করে ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে চুড়ান্ত নিরীক্ষণ প্রতিবেদন দাখিল করেণ।ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান ১৪ বছরে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায়ের হিসেবে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ২ শত ১৭ টাকা গড়মিল করেছেন। এদিকে নিরক্ষন কমিটির চুরান্ত প্রতিবদনে বলা হয় দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন দিতেন সামান্য যাহা সমাজে উল্লেখ করা যায়না। এছাড়া নিরক্ষক কমিটি অসহায়ের মত রিপোর্টে অনুরোধ করেন যেহেতু প্রধান শিক্ষক ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর গ্রহণ করবেন তাই তার পূর্বে উদ্ধৃত টাকা বিদ্যালয়ের ক্যাশে জমা দিতে। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন মাখন জানান নিরীক্ষণ প্রতিবেদন আমি পেয়েছি। তবে রিপোর্ট যাচাই বাছাইয়ের জন্য পুনঃ নিরীক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নাম না বলার শর্তে একজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন আপনি দেখবেন আমাদের ছয় শিক্ষক দ্বারা নিরক্ষক কমিটির এই প্রতিবেদন পাল্টে যাবে যেহেতু তাদের দ্বায়িত্ব দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে আবারও পুনঃ নিরক্ষন করা হচ্ছে তাহলে কি হতে পারে বুঝে নিবেন।