সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালীতে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে শ্রমিকের কাজ করিয়ে মেরামতের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার ফেরদৌসির বিরুদ্ধে।
সদর উপজেলার ১৯ নম্বর শিয়ালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসী লিখিত এই অভিযোগ করেন। শিক্ষার্থীদের দিয়ে শ্রমিকের কাজ করানোসহ ওই শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হলেও তার অগ্রগতি নেই। প্রভাবশালী এক ব্যক্তির আত্মীয় হওয়ার সুবাদে কোনো নিয়ম মানছেন ওই শিক্ষিক। তার স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও অন্যান্য শিক্ষকরা।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালে পটুয়াখালী ১৯ নম্বর শিয়ালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই দফা ক্ষুদ্র মেরামতের নামে প্রায় দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজের নামে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী নিয়োগ করা হয়। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে টানা একমাস চলমান ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষিক ও শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে শ্রমিকের কাজ করান তিনি।
শিশুদের দিয়ে শ্রমিকদের কাজ করানোর ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে টনক নরে পটুয়াখালী শিক্ষা দফতর ও জেলা প্রশাসনসহ নানা মহলে। তৎকালীন সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নিলুফা ইয়াসমিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ঘটনাস্থলে তদন্তের দিন ধার্য কর হলে অদৃশ্য কারণে ওই তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
অভিযোগ রয়েছে পটুয়াখালীর এক জনপ্রতিনিধির আত্মীয় হওয়ার সুবাদে শিক্ষিক নাজমুন নাহার কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেন না।
এলাকাবাসী জানান, নাজমুন নাহার পান থেকে চুন খসলেও শিক্ষার্থীদের মারধর করে থাকেন। আর এ ঘটনায় স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদের হেনেস্তা হতে হয়। কথায় কথায় শিক্ষকদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেন। এছাড়াও তিনি নিয়মিত স্কুলে না এসে এককালীন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে আরো বলা হয়, তার স্বামী আ. ছালাম ব্যাংক কমকর্তা হওয়ার সুবাদে বিগত দিনে উপবৃত্তির অর্থের সিংহভাগ হাতিয়ে নিতেন তিনি। প্রতি বছর সি.এফ.এস খাতে বরাদ্দে সব অর্থের সিংহভাগ প্রধান শিক্ষক নিজেই হাতিয়ে নেন। নামমাত্র অর্থ খরচ করে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে বাকি অর্থ হাতিয়ে নেন। অভিযোগকারীরা সুষ্ঠুর তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষিক নাজমুন নাহার বলেন, অভিযোগ থাকতেই পারে। অন্য স্থান থেকে চাকরি করতে আসি নাই। আমি পটুয়াখালীর লোক যা ইচ্ছে করবো, সাংবাদিকের কাছে কৈফিয়ত দেব না। ফোনে নয় অফিসে এসে কথা বলুন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান মুক্তা মিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষিক নাজমুন নাহারের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত অফিসার অসুস্থ থাকায় ওই তদন্তের অগ্রগতি নেই।
সুত্র ডেইলি বাংলাদেশ