বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সাবিনা ইয়াসমিন (২২) নামে এক গৃহবধূকে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে অভিযুক্ত স্বামী এমাদুল মোল্লা (৩৫), শ্বাশুড়িসহ ৬জনকে আসামী করে বুধবার রাতে মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার ভাইজোড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী বাদল চাপরাশির মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে প্রায় ৩ বছর পূর্বে উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালী ৫নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হেমায়েত মোল্লার ছেলে এমাদুল মোল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর এ দম্পতির ঘরে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। বর্তমানে মাহিন নামের সন্তানটির বয়স ১৮ মাস। বিয়ের কিছু দিনপর থেকে স্বামী এমাদুল মোল্লা স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন সাবিনার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো। স্বামী ও শ^শুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে সাবিনা বাবার বাড়ি চলে যায়। এই সুযোগে নিজেদের অপকর্ম চাপা দিতে এমাদুল মোল্লা বাদী হয়ে স্ত্রী সাবিনা ও তার বাবার বাড়ির লোকজনকে আসামী করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি সাজানো মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি মিথ্যা বলে চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। এরপর সাবিনার স্বামী ও শ^শুর বাড়ির লোকজন তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের ভুলের জন্য ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে আর নির্যাতন চালাবেনা বলে অঙ্গীকার করে সাবিনাকে স্বামীর বাড়ি নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর পুনরায় এমাদুল মোল্লা স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে চাপ সৃষ্টি করে।
গত ২৩ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় এমাদুল মোল্লা যৌতুকের দাবি এবং সাবিনার চেহারা নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক ও কটুক্তি করে। সাবিনা তার মাকে বিষয়টি জানিয়ে খবর দেয়। সাবিনার মা এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মায়ের সামনে এমাদুল মোল্লা সাবিনাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। এসময় সাবিনাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে শিশু সন্তানটিকে অন্যত্র নিয়ে যায় এবং সাবিনার মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে সাবিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মাসুদুজ্জামান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শিশুটিকে উদ্ধার এবং অভিযুক্ত আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।