শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
ভান্ডারিয়ায় ২৫ ও ২৬ এপ্রিল স্পেশালাইজড মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে ভান্ডারিয়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন ঝালকাঠিতে ট্রাক চাপায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ ঝালকাঠিতে ট্রাক-কার-অটোর সংঘর্ষ, নিহত ১২ বজ্রপাতে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ভান্ডারিয়া পৌরসভা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা নির্বাচনি এলাকার খাজনা মওকুফের ঘোষণা দিলেন মহিউদ্দিন মহারাজ কাউখালীতে কীটনাশক পান করে কৃষকের আত্মহত্যা কাউখালীতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারে থাকা একটি পরিবারের ৪ জন সদস্য ভান্ডারিয়ায় পাসপোর্ট নিয়ে ফেরা হলো না ঘরে, সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু বুয়েট নিয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা শাফায়েত হোসেন অভির কিছু কথোপকথন বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান -মহিউদ্দিন মহারাজ এমপি কাউখালীতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কাউখালীতে মৎস্য সুফলভোগী জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরন ভান্ডারিয়ায় বিহারী লালমিত্র পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কাউটদের দীক্ষা অনুষ্ঠান ভান্ডারিয়ায় পিকআপে করে গরু চুরির সময় ৩ চোর আটক কাউখালী উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ে জনবল সংকট থাকার কারণে জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পিরোজপুরে স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত স্বামী ১৪ বছর পর গ্রেপ্তার পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আবারো ৩ জন নিহত পিরোজপুরের এক জেলের জালে ধরা পড়ল ২০ লাখ টাকার লাক্ষা মাছ
মানুষের জীবন বড়, না জীবিকা?

মানুষের জীবন বড়, না জীবিকা?

করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কাজকর্ম। তাই অলস সময় কাটাচ্ছেন এক মজুর। এটাই বাংলাদেশের বর্তমান চিত্র

মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। শুক্রবার পর্যন্ত দেশের মোট ১ হাজার ৮৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন মোট ৭৫ জন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যে পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে অর্থনীতির চাকা। কিন্তু মানুষের জীবনের চেয়ে তো অর্থনীতি বড় নয়! তাছাড়া কেবল বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের মোটামুটি সব দেশেই চলছে লকডাউন।

সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত ‘সাধারণ ছুটি’ তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পরে পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলো। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার এখনো পুরোমাত্রায় শুরু হয়নি। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী সনাক্ত হওয়ার ১৭ দিন পরে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল সংক্রমণ ঠেকানো।

কিন্তু গত এক এক সপ্তাহের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা দুটোই বেশ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এমন অবস্থায় আগামী ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বহাল থাকছে।

কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে রীতিমতো সংগ্রাম করছে। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পারায় গ্রামাঞ্চলের কৃষক এখন দিশেহারা।

মুন্সিগঞ্জের সবজি চাষি আখতার দেওয়ান বলছিলেন, বিক্রি নেই তাই উৎপাদিত সবজি মাঠেই পড়ে আছে। তিনি বলেন, ‘মাল বিক্রি করতে পারতেছি না। যদি ঢাকায় মাল পাঠাইতে না পারি, তাহলে মাঠ থেইকা সবজি তুলে লাভ কী?’

একই অবস্থায় আছেন সাভারের রাজিয়া সুলতানা। তার ফার্মে উৎপাদিত দুধ মিষ্টির দোকানে বিক্রি হতো। লকডাউনের কারণে এসব দোকান বন্ধ থাকায় এখন রাজিয়া সুলতানার মাথায় হাত। কেননা দুধের কেজি যেখানে ৬০ টাকা ছিল, সেইটা এখন ৩০ টাকা নেমে এসেছে।

তবে পৃথিবীর বহু দেশ এখন অর্থনীতির চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

অর্থনীতি না জীবন?

আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন পদ্ধতি কাজ করেছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এটিই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশের সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিধি-নিষেধ আরোপ করলেও মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভীত নড়ে গেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু তারপরও কোনও উপায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকরা।

ঢাকার বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক পূরবী দেবনাথ বলছিলেন, অর্থনীতির বিবেচনায় এ মুহূর্তে স্বাস্থ্য ঝুঁকিকে হালকা করে দেখার মোটেও সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেজন্য সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্য লকডাউন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে বেশি কার্যকর।

পূরবী দেবনাথ মনে করেন, ‘অর্থনীতির চেয়ে জীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ‘লকডাউন’ কিছুটা হলেও কাজে লেগেছে। কিন্তু এই ‘লকডাউন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেন এক কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, লকডাউনের মধ্যেও বিভিন্ন আক্রান্ত এলাকা থেকে মানুষজন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছে। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে বেশি।

তাছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের বিতরণের জন্য যেভাবে মানুষ জড়ো করা হয়েছে সেটিও সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন হাট-বাজারে অনেকেরই সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মেনে চলেননি।

গার্মেন্টস মালিকদের আরও অপেক্ষা করতে হবে

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মানুষকে সংক্রমণের হাত থেকে যেমন বাঁচাতে হবে তেমনি অর্থনীতির কথাও চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে কৃষি এবং ক্ষুদ্র শিল্প থেকে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন এবং বাজারজাতকরণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বোরা ধানের মওসুম। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শস্য। এ ধান কীভাবে মাঠ থেকে তুলে আনা যায় সেটিও ভাবতে হবে।

গার্মেন্টস শিল্পের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এখনো সেগুলো খুলে দেবার সময় আসেনি। এজন্য আরো তিন থেকে চার সপ্তাহ অপেক্ষা করা প্রয়োজন। গার্মেন্টস কারখানা খোলার পর শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘তারা যে প্রোডাক্টটা ৫০০ জনকে দিয়ে তৈরি করান, সেখানে ৫০০ জন এখন নিয়োগ করলে হবে না। যেভাবে শ্রমিকরা গাদাগাদি করে বসেন সেটা হলে চলবে না। এক সিট বা দুই সিট বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে দূরত্ব রেখে ওয়ার্কারদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে।’

প্রয়োজন হলে ২৫ এপ্রিলের পরেও দেশজুড়ে লকডাউনের সময়সীমা আরো বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন। তারা মনে করছেন, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার সম্ভবত মে মাসের শেষ পর্যন্ত চলতে পারে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019 pirojpursomoy.com
Design By Rana