শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
ঢাকার ধামরাইয়ে সংসারের অভাব-অনটনের কারণে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে সন্তানসহ আত্মহত্যাচেষ্টাকারী সেই মা ফের গলায় ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করেছেন। রোববার ভোরে উপজেলার কাওয়ালীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বারবার আত্মহত্যার চেষ্টার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, পারিবারিক কলহ আর সংসারের অভাব-অনটন। স্বামী সোহেলের চাকরি না থাকায় গৃহবধূ লাইজু আক্তার নীলার দুই শিশুসন্তান, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে সংসার চলছে খুবই কষ্টে। তাই প্রতিনিয়ত সংসারে লেগে থাকে ঝগড়া-বিবাদ। স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ায় চা বিক্রেতা শ্বশুর তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে চান। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। আর এরই জের ধরে গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে অবুঝ দুই শিশুসন্তান নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিলে তারা প্রাণে বেঁচে যান।
এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ওই গৃহবধূর চা বিক্রেতা শ্বশুর ফের তাদের খেতে দিতে পারবেন না বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। রোববার তাই গৃহবধূ রাগে ও ক্ষোভে অভিমানে ফের ভোরে নিজের ঘরের ভেতর আড়ার সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মত্যার চেষ্টা করেন। এটি দেখে ওই দুই শিশুসন্তান কান্না করতে থাকলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ফের ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে গৃহবধূ লাইজু আক্তার নীলা বলেন, আমার স্বামী পোশাক কারখানায় চাকরি ও শ্বশুর বাজারে চা বিক্রি করতেন। আমরা তখন খেয়েপরে বেশ ভালোই ছিলাম। আমার স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ায় সংসারে চরম অভাব-অনটন দেখা দেয়। নিজে না খেয়ে থাকলেও দুঃখ নেই। সন্তানরা আমার কাছে খাবার চায়, আমি মা হয়ে দিতে পারি না। এটি সহ্য করতে পারি না। তার মধ্যে শ্বশুরের বকুনিতে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছি না। মানুষের জন্য মরতেও পারছি না। এ অভাবের সংসারে সারাক্ষণ ঝগড়া-বিবাদ করে কী লাভ হবে!
এ ব্যাপারে উপজেলার কাওয়ালীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রাসেল মোল্লা বলেন, বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো নয়। সংসারে অভাব থাকতেই পারে। পারিবারিক কলহও থাকবে। তাই বলে কি আত্মহত্যা করতে হবে। এ ব্যাপারে অবশ্যই পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সুত্র বাংলাদেশ জার্নাল