মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অন্যতম দরিদ্র এলাকা খানমরিচ ইউনিয়ন। প্রায় ৩০ হাজার জনবসতির এই এলাকায় অধিকাংশই দিন মজুর। করোনার প্রভাবে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে এলাকার প্রায় দেড় সহস্রাধিক মানুষ। সরকারিভাবে দেওয়া ত্রাণ জনসংখ্যার বিপরীতে অপ্রতুল। খাদ্য ও থাকতে না পেরে তারা বাধ্য হয়ে করোনার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে করছে কাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নে ধনী লোকের সংখ্যা হাতেগোনা। এই ইউনিয়নের ৭৯ থেকে ৮০ ভাগ লোক দিনমজুরি কাজের সাথে জড়িত। বছরের অধিকাংশ সময় এই জনগোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গোটা দেশের সব জায়গায় কাজের পরিবেশ না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে এলাকায় ফিরে এসেছে।
এলাকাতে কাজের পরিবেশ না থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদের মধ্যে অনেক পরিবার সরকারিভাবে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা পেয়েছেন। যা কয়েকদিনেই ফুরিয়ে গেছে। ফলে পরিবারের খাবার জোগাড় করতে কর্মক্ষম মানুষগুলোকে এলাকায় কাজ খুঁজতে হচ্ছে।
এ অবস্থায় সোমবার খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে দুধবাড়িয়া থেকে বড় পুকুরিয়া গ্রামে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হয়। এই কাজের অর্থায়ন করছে খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদ এবং গ্রামের মসজিদ ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এই মেরামত কাজে দুধবাড়িয়া ও বড় পুকুরিয়া গ্রাম থেকে অন্তত ৭০ জন শ্রমিক অংশ নিয়েছে। দিন শেষে তাদের প্রত্যেকে ৩৫০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেয়া হবে।
সড়ক মেরামত কাজে অংশ নেওয়া দুলাল, আমিরুল ও জলিল সহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, কাজ না করলে খামু কি। সরকার যে চাল দেয় তাতে তো সবার পেট ভরে না। তাই করোনার ভয় করলেও কাজ করতেই হচ্ছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন।
দুধবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতে এভাবে একসঙ্গে কাজ করা অনুচিত সেটা আমরা জানি। কিন্তু এরপরেও সার্বিক বিবেচনা করে কাজ করাতে হচ্ছে। এতে শ্রমিকরা কিছুটা হলেও আর্থিক সহায়তা পাবে। তবে শ্রমিকদের সবাইকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, কোনভাবেই যেন কেউ করোনার ঝুঁকি সৃষ্টি না করে এবং অন্য কেউ ঝুঁকিতে না পরে। সে বিষয়ে সর্বদা খেয়াল রেখে সড়ক মেরামত কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদেরকে দ্রুত অবগত করা হবে।
সুত্র মানবজমিন