বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা
পুলিশ হেফাজতে সিলেটে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনার পর দেশজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইঁয়া। তাকে নিয়ে খোদ তার নিজের জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জেও চলছে সমালোচনার ঝড়। তার এই কর্মকান্ডে হতাশ স্থানীয়রা, এই ঘটনায় তার দৃষ্টান্ত মুলক বিচারও দাবি করেছেন তারা।
আকবর হোসেন ভূইঁয়া চাকুরী জীবনের প্রথমে কনস্টেবল পুলিশের পদে চাকুরীতে ঢুকেন। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পদোন্নতি লাভ করে। পুলিশে চাকুরীতে যোগদান করে বদলে গেছে আকবর হোসেন ভূইঁয়ার পরিবার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার বগইর গ্রামের জাফর আলী ভূইয়ার বড় ছেলে পুলিশের সহকারি পরিদর্শক (এস.আই) আকবর হোসেন ভূইঁয়া। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নিজের অবস্থান দ্বিতীয়। সবার বড় বোন। পিতা জাফর আলী ছিলেন স্কুল শিক্ষক। পুলিশে চাকুরী হওয়ার পর যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান আকবর। পেয়ে যান সোনার হরিণ ও এ কারনে সে বনে গেছেন বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক। গ্রামের বাড়িতে নির্মাণ করেছেন বিলাস বহুল বাড়ি। প্রথম তলার কাজ ইতিমধ্যে শেষ করেছেন। পাশপাশি বাড়ির সামনে নির্মাণ করেছেন আধুনিক গেইট। যার নির্মাণ কাজ চলছে। তা ছাড়াও বাড়ির পাশাপাশি ও আশে পাশে রয়েছে তাদের অঢেল সম্পত্তি। আর সব কিছু হয়েছে পুলিশের এসআই আকবর হোসেন ভূইঁয়া বদৌলতে।
সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান নামে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতনের সাথে পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূইঁয়া জড়িত থাকায় হতবাক তার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা বাসী। তারপরও তারা এই ঘটনায় মর্মাহত। তবে তারা বলছেন, পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূইঁয়া ও তার পুরো পরিবার বির্তকিত। তার পিতা ধর্ষণ মামলার আসামিও ছিলেন। স্থানীয় বিএনপি রাজনীতিতে তাদের ছিল আধিপত্য। সময়ের সাথে তারা এখন আ.লীগ রাজনীতিতে জড়িত। টাকার বিনিময়ে চাকুরী নিয়ে ছিলেন তিনি। পুলিশের চাকুরীতে যোগদান করে হয়েছে অসংখ্য সহায় সম্পত্তির মালিক। পাশপাশি তার সম্পত্তির হিসাব ও তদন্ত করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
অপরদিকে রায়হানের মৃত্যুতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার পরিবারের লোকজনের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।
কিছুতেই যেন তার পরিবারের লোকজন শাত্বনা খুঁজে পাচ্ছেনা। বুক ভরা শুধু কষ্ট আর হাহাকার বিরাজ করছে তার পরিবারের মাঝে।
এ দিকে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর ইতিমধ্যেই সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া অপর ৩ জন হলেন- কনস্টেবল হারুন মিয়া, টিটু মিয়া ও তৌহিদুল ইসলাম।তাদের মধ্যে এএসআই পদবীর একজন রয়েছেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের যুগ্ন আহবায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সি জানান, বিষয়টি আশুগঞ্জের জন্য লজ্জাজনক ও নিন্দনীয় কাজ। পাশাপাশি পুলিশ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ভূইঁয়া ও তার পরিবার আ.লীগের রাজনীতির সাথে কখনো জড়িত ছিল না। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনগত ভাবে তার বিচার করা হোক।
তবে অভিযুক্ত আকবরের ছোট ভাই আরিফ ভূইয়ার দাবি তার ভাই এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে না।