সোমবার, ১৬ মে ২০২২, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃদেশের পূর্বাঞ্চল রেলপথের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে শুরু করে তালশহর রেলস্টেশন ও রেলপথের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে গত ১ বছরে নারী-পুরুষসহ ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২১ সালের মে থেকে এ বছরের মে পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে আন্তঃনগর, মেইল, লোকাল ও মালবাহী ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।সম্প্রতি কয়েকদিন ঘুরে রেলওয়ে থানা সূত্রে অনুসন্ধান বলে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকজনই চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে উঠানামা, ট্রেনের ছাদে অনিরাপদ ভ্রমণ, দুই বগির সংযোগস্থলে বসা, ট্রেনের দরজার হাতলে ঝুলে ভ্রমণ করা, রেললাইনের পাশ দিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে হাঁটা, বিভিন্ন রেল সেতুগুলোতে অসতর্কভাবে পারাপার, রেলক্রসিংয়ে অসাবধানতা বশত রেললাইন পারাপারসহ নানাবিধ কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। আবার অনেক সময় অপরাধীরা খুনের পর রেললাইনে লাশ ফেলে ট্রেন দুর্ঘটনা বলেও চালিয়ে দেয়। তাই মারা যাওয়া ব্যক্তিরা বেশিরভাগই অজ্ঞাতনামা হয়ে থাকে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও রেলওয়ে পুলিশ সার্বক্ষণিক যাত্রী নিরাপত্তার কাজে ব্যস্ত থাকলেও কিছু যাত্রী ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনে ও দরজার হাতলে ঝুলে সবার চোখ এড়িয়ে প্রায় সময়ই অনিরাপদ ট্রেন ভ্রমণ করে থাকে। পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা এসব করে থাকে । ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ হলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এক শ্রেণির যাত্রী ট্রেনে অনিরাপদ ভ্রমণ করে থাকে। ছোট স্টেশনগুলোতে যাতায়াতের জন্য বিশেষ করে লোকাল ও মেইল ট্রেনের সংখ্যা ও বগি কম। এজন্য আসন স্বল্পতার কারণে তারা অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে বাধ্য হয়। যার ফলে এসব অস্বাভাবিক মৃত্যু থামানো যাচ্ছে না বলে অনেকের ধারনা ।এছাড়া রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোনে সেলফি, হেডফোন ব্যবহার ও অন্যমনস্ক হয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গিয়েও ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে অনেক পথচারীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা এড়াতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত মাইকে সতর্কতার ঘোষণা দিলেও অনেকেই এসব তোয়াক্কা করে না। আবার অনেক সময় অপরাধীরা তাদের কৌশল হিসেবে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করে। রেললাইনে ফেলে রেখে ট্রেনে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়। ফলে অনেক হত্যার ঘটনাও থানায় অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল করিম বলেন, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও নিম্ম আয়ের লোকজন অসচেতনতার কারণে তা মানছেন না। ট্রেন যাত্রী ও সাধারণ লোকজন অসতর্কতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার শিকার বেশিভাগই রয়েছে অজ্ঞাতনানা ব্যক্তিরা। আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সুপার কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, পূর্বাঞ্চল রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে অনেক লোকজন মারা যাচ্ছে। মূলত অসচেতনতার কারণে প্রতিনিয়ত এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজন ট্রেন যাত্রীদের সতর্কতায় নিয়মিত মাইকিং করছেন। পাশাপাশি পালন করা হচ্ছে সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচিও ।