রবিবার, ২৬ Jun ২০২২, ১১:১০ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় স্কুলছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনায় আলোচিত সিরিয়াল রেপিস্ট শামিম হোসেন মৃধাকে (৩২) রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, পেশায় গাড়িচালক শামীম নিজ এলাকায় অন্তত পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত। অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ শেষে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে গিয়েও ধর্ষণ করত শামীম। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ধর্ষণ ও মাদক মামলা রয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শামিম হোসেন মৃধা আব্দুল বারেক মৃধার ছেলে।
র্যাবের কমান্ডার মঈন জানান, পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার এক স্কুলছাত্রীকে গত শনিবার অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে শামীম। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ভাণ্ডারিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (মামলা নম্বর-১৫) দায়ের করেন। পরে অভিযুক্ত শামীমকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্কুলশিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। উল্লিখিত ধর্ষণের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে শামীম র্যাবকে জানিয়েছে, স্কুলপড়ুয়া ওই ছাত্রীকে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে ধর্ষণ শেষে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এবং ঘটনার পরপরই ঢাকায় আত্মগোপন করে।
র্যাবের মিডিয়াপ্রধান আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত শামীম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ভাণ্ডারিয়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গভীর রাতে ঘরের দরজা ভেঙে হামলা করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর একই উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রীকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রামদা দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। একইভাবে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর আরেক মাদ্রাসাছাত্রীকে নির্যাতন করে। প্রতিটি ঘটনায় ভাণ্ডারিয়া থানায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে র্যাব। কিন্তু বেশির ভাগ ভুক্তভোগী লোকলজ্জায় আইনের আশ্রয় নেয়নি।
গ্রেপ্তার শামীমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার মঈন বলেন, রাজধানীর বাবুবাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের চালক হিসেবে কাজ করে শামীম। ১৬ বছর বয়সে সে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন ও মাদক কারবারের মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। বিভিন্ন এলাকায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধ শেষে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। আত্মগোপনে থাকাকালীন একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এড়াতে এক স্থানে বেশি দিন অবস্থান করত না। এ ছাড়া, তার নামে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ১০টিরও বেশি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার শামীম ইতিপূর্বে ধর্ষণ ও অন্যান্য মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে চার থেকে পাঁচ বার কারাভোগ করেছে। শামিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তথ্য পেয়েছে র্যাব।
প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারকৃত শামীমের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।