রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা খুলে দেওয়া ও মাহমুদুর রহমান এর সাজা বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন কাউখালীতে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফিসের সময়সূচী মানছে না বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এমাদুলের পরিবারকে ভাণ্ডারিয়া বিএনপি’র আর্থিক সহায়তা প্রদান ভান্ডারিয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গণ সমাবেশ কাউখালীতে সমুদ্রগামী মৎস্যজীবীদের মাঝে চাল বিতরণ ভান্ডারিয়ায় পুত্রবধূর দায়ের কোপে শ্বশুরের মৃত্যু গণ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে এ দেশের মাটিতে এনে ফাঁসির দাবী ভাণ্ডারিয়া সংবর্ধনা সভায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ভান্ডারিয়ায় বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছে গুলিবিদ্ধ নাঈম কাউখালীতে দেয়ালে দেয়ালে রং তুলির আঁচড়ে নতুন দেশের ছবি ইন্দুরকানীতে সাংবাদিকের মাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুট  ভান্ডারিয়ায় বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত কাউখালীতে ছাত্রদলের মিছিল সমাবেশ কাউখালী থানা পুলিশকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করলেন উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ৯ বছর পর দেশে ফিরলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন ভবিষ্যতে রাজনীতি করা অনেক কষ্টকর হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিরোজপুরে নিজের ঘর থেকে কৃষকের হাত পা বাধা মরদেহ উদ্ধার ভান্ডারিয়ায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পুনর্বাসিতদের প্রশিক্ষণ কোর্স এর উদ্বোধন কাউখালীতে অংশীজনের অংশগ্রহণে মৎস্য সম্পদের স্থায়িত্বশীল এবং সর্বোত্তম ব্যবহার বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হারুনকে ডিবি থেকে বদলি ভান্ডারিয়ায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন
হাসপাতালে সাংবাদিকদের মারার জন্য জুতা নিয়ে ধাওয়া করেন ডা. তানজিনা

হাসপাতালে সাংবাদিকদের মারার জন্য জুতা নিয়ে ধাওয়া করেন ডা. তানজিনা

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে অবস্থিত শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল (টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল)। সরকারি নির্দেশনা না মেনে হাসপাতালের নাগালের মধ্যেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগোনষ্টিক সেন্টার। এসমস্ত প্রাইভেট হাসপাতালের দালালদের মাধমে রুগী পাঠানো ও ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের নির্দেশনা মোতাবেক ঔষধ লিখে মোটা অংকের কমিশন হাতিয়ে নেয়াই যেন ডাক্তারদের মূল পেশাগত দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে।

এতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রুগীরা হচ্ছে সেবা বির্তক। সাধারণ রুগীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা। শুক্রবার সকালে রুগীদের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমকর্মীরা এগিয়ে গেলে ডা. সৈয়দা তানজিনা আফরিন ইভা তাদের সাথে অসদাচরণ করেন ও জুতা হাতে মারার জন্য তেড়ে আসেন। তিনি দাম্ভিকতার সাথে উচ্চ কন্ঠে আওয়াজ তুলে বলেন, ‘আই হেট জার্নালিস্টস’।

সরেজমিনে হাসপাতাল গিয়ে জানা যায়, টঙ্গী সরকারী হাসপাতালের সন্নিকটেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেসকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগোনষ্টিক সেন্টার। এসব হাসপাতালের দালালরা সরকারি হাসপাতালের ভিতরে, মূল ফটকে, বিভিন্ন ডাক্তাদের চেম্বারের দরজায় ও রুমের ভিতরে অবস্থান করতে দেখা যায়। চিকিৎসা নিতে রোগী আসতে দেখলেই তাদের বিভিন্ন প্রলোভনে রোগীদের কান ভারি করে ফেলায় রুগীরা কোথায় চিকিৎসা নিবে তার সঠিক স্বিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকে। এই সুযোগটি গ্রহণ করে প্রাইভেট হাসপাতালের দালালরা। রুগী ভাগিয়ে নেয়া দালাল কর্তৃক রোগীদের টানাটানির দৃশ্যও মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে।

বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালের নিজস্ব সীল মোহরযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার শ্লিপ ডাক্তাদের রুমে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। প্রতিটি হাসপাতালে এ সব ডাক্তারদের নামে একটি করে কোড নম্বর চালু রয়েছে। তাদের স্বাক্ষরযুক্ত চিকিৎসা পত্র নিয়ে রুগীরা যে হাসপাতালেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যায়, তার কমিশন জমা হয় ডাক্তারদের ঐ কোড নম্বরে। সরকারি হাসপাতালে কোন রোগের পরীক্ষা করাতে যা খরচ হয় তার চেয়ে তিনগুন খরচ হয় বেসরকারি ক্লিনিক গুলোতে। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে কিছু সংখ্যক স্টাফও এ কাজে জড়িত। তারা এ কাজের জন্য প্রতিনিয়ত মোটা অংকের কমিশন পেয়ে থাকে। ডাক্তার দেখানোর পর রোগীরা বের হলে ডাক্তারের চেম্বারের দরজার সামনে থেকে শুরু করে হাসপাতালের মুল ফটকের সামনে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি রোগীদের হাতে থাকা ব্যবস্থা পত্রের ছবি তাদের মুঠোফোনে তুলতে থাকে। ফলে রোগীরা নিত্য ভোগান্তিতে পরে।

প্রাইভেট হাসপাতালের দালালদের মধ্যে ফাতেমা জেনারেল হাসপাতালের সীমা, সন্ধাণী ডায়াগোনষ্টিক সেন্টারের সোহাগ, আলামিন, নিউ লাইফ কেয়ারের শাহানাজ, ঢাকা কার্ডিয়াকের আজিজ, জীবন, রাজিব, ঝিনুক, উত্তরা আল আশরাফের শাকিল, মিরাজ, আক্কাস, সুমন, পলাশসহ আশপাশের সকল হাসপাতালের দালালরা হাসপাতাল চত্তরে রুগী ভাগিয়ে নিতে সব সময় অবস্থান করেন। এতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বির্তক হয়।

টঙ্গী সরকারী হাসপাতালের প্রতিদিনের বাস্তব চিত্র এটি। আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় ডা. সৈয়দা তানজিনা আফরিন ইভা হাসপাতালের ইমাজেন্সি কক্ষের দরজা বন্ধ করে প্রাইভেট হাসপাতালে দালাল ও প্রাইভেট হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সাথে গল্পে মেতে রয়েছেন। অথচ কক্ষের দরজার বাইরে অপেক্ষমান রোগীরা চিকিৎসা সেবার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অহেতুক কষ্ট করছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে রোগীরা অভিযোগ করলে তারা ডাক্তারের কাছে বিষয়টি জানতে চান। এ সময় ডা. ইভা গনমাধ্যমকর্মীদের উপর চড়াও হয়ে জুতা হাতে এগিয়ে যান মারধর করার জন্য। এ সময় তিনি দাম্ভিকতার সাথে উচ্চ কন্ঠে বলেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার এনিবডি, আই হেট জার্নালিষ্ট’।

এছাড়া হাসপাতালের অপরিছন্ন পরিবেশ, দুর্গন্ধযুক্ত টয়লেট, নিন্ম মানের খাবার পরিবেশন, সঠিক সময়ে খাবার না দেয়া ও ঢাকা কার্ডিয়াক হাসপাতাল কর্তৃক টঙ্গী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে একটি এসি উপহার দেয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েয়ে হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে সাধারণ রুগীসহ এলাকাবাসির মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের রোগীরা জানান, বেসরকারি হাসপাতালের কিছু দালাল প্রতিনিয়তই হাসপাতালের ইমারজেন্সি রুমসহ হাসপাতাল চত্তরে ঘুরে বেড়ায়। টঙ্গী ও আশপাশের এলাকা থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা নিম্ম আয়ের অসহায় রোগীদের স্বল্প ব্যয়ে ভাল সেবা দেয়ার কথা বলে তাদের কর্মরত হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এদের আচরণ সন্দেহ জনক হওয়ায় প্রতিবাদ করলে দালালরা রুগীদের সাথে অসদাচরণ করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। অনেক সময় স্বল্প আয়ের এ সব রোগীরা দালালদের প্ররোচনায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভিটা-বাড়ি ও ঘটি-কম্বল বিক্রয় করে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে পথে বসে যায়। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য হাসপাতালের সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ এলাকার জনপ্রতিনিধির প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগোনষ্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষের কাছ থেকে ডাক্তার ও ব্রাদাররা কৌশলে রোগী সরবরাহের নামে টাকা আদায়ের বিষয়টি যেন বৈধ। অনেক মসয় প্রকাশ্যেই এ কাজটি করতে দেখা যায় ডাক্তার ও ব্রাদারদের।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মাসুদ রানা বলেন, ভাই ঘটনাটি আমি শুনেছি। আমি ছুটিতে রয়েছি। আগামকাল অথবা পরশু হাসপাতালে এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।

Print Friendly, PDF & Email

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019 pirojpursomoy.com
Design By Rana
error: Content is protected !!