শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক।।
তিন মেয়েকে নিয়ে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলেন পারভীন সুলতানা (৪৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন এত অল্প সময়ে চুরমার হয়ে যাবে তা কোনোভাবেই টের পাননি তিনি।
পারভীন সুলতানার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ক্যান্সার। বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করে দিন কাটছে তার। মায়ের এমন যন্ত্রণায় বুক ফেটে কান্না আসছে মেয়ে সানজিদা খন্দকারেরও। কিন্তু মাকে বাঁচাতে যে অর্থের প্রয়োজন সেটির জোগান দেয়ার সক্ষমতা নেই তার পরিবারের।
পারভীন বর্তমানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের সি ব্লকের ষষ্ঠ তলার ৬১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৫১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
সুলতানার বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চালিয়াকান্দি গ্রামে। তার স্বামী কাইয়ুম খন্দকার এক বছর আগে তাকে ছেড়ে নতুন সংসার পেতেছেন। তখন থেকেই তিন মেয়েকে নিয়ে নতুন করে জীবন সংগ্রাম শুরু করেন তিনি। স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর বাবার বাড়ি ও বোনের বাড়িতেই থাকা শুরু করেন তিনি। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন আগেই। মেজ এবং ছোট মেয়ের পড়ালেখা এখনও শেষ হয়নি। মেজ মেয়ে সানজিদা খন্দকার ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে সানজিদাই সংসারের হাল ধরেন।
দুই বছর আগে হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করেন পারভীন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তখন কোনো রোগ ধরা পড়েনি। এরপর মাঝে মধ্যেই পেট ব্যথায় অস্থির হয়ে পড়েন পারভীন। খালার কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাস তিনেক আগে পারভীনকে ঢাকায় একটি ক্লিনিকে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান সানজিদা। এবার পারভীনের পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে বলে জানান চিকিৎকরা।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাস-দেড়েক চিকিৎসা চলে পারভীনের। সেখানে পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচার করার জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নীক্ষার পর চিকিৎকরা তার খাদ্যনালীতে টিউমার রয়েছে বলে জানান। সেই টিউমার থেকেই এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত পারভীন।
গত ২১ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পারভীনের খাদ্যনালীর টিউমার অস্ত্রোপচার করা হয়। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সহেযাগিতা নিয়েই পারভীনের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এবার ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যয় কীভাবে মেটাবেন সেই চিন্তায় সানজিদা। অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে থাকার কারণে টিউশনিও করতে পারছেন না তিনি।
সানজিদা খন্দকার বলেন, বাবা চলে যাওয়ার পর আমরা আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ই থাকছি। মায়ের চিকিৎসার খরচও আত্মীয়-স্বজনরাই দিচ্ছে। টিউশনি করে পড়ালেখার খরচ চালাই। হাসপাতালে প্রতিদিনই মায়ের বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হচ্ছে। ক্যানসারের চিকিৎসায় কত টাকা লাগবে সেটি আমরা এখনও জানি না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাকে ক্যানসার হাসপাতালে রেফার্ড করা হবে। সেখানে গিয়ে কেমো থেরাপি বা রেডিও থেরাপি দিতে হবে কী-না সেটি চিকিৎসকরা বলবেন। কিন্তু আমাদের তো মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগানোর সক্ষমতা নেই।
তিনি বলেন, বাবা আরেকটি সংসার শুরু করার পর মা-ই আমাদের সব। তিনিও এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। অথচ রোজগারের কোনো পথ নেই। প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। এমন কোনো আত্মীয় নেই, যাকে বাকি রেখেছি সাহায্য নিতে। এখন কীভাবে চিকিৎসা করাব মায়ের?
সানজিদা বলেন, শুনেছি অনেকেই দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। প্লিজ আপনারা আমার মাকে বাঁচান। তার কিছু হলে এতিম হয়ে যাব আমরা তিন বোন।
পারভীন সুলতানার বিষয়ে আরও জানতে এবং তাকে সহযোগিতা করা যাবে 01716486006 বিকাশ নম্বরে।