শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
ভাণ্ডারিয়া প্রতিনিধিঃ
মা-বাবা আমি তোমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কারণ তোমরা মরে গেলে আমি কিভাবে থাকবো। আবদারটা রেখো আমার হাত থেকে দুইবার কোরান শরীফ পড়ে গেছিলো তাই কোনও গরীব ভিক্ষুককে ৫০টাকা করে ১০০ টাকা দিও। হনুফা আপু, রাবেয়া আপু ,রোকেয়া আপু তোরা মাকে দেখিস। তোরা মা-বাবার কাছে থাকিস। তোদেরকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি কস্ট নিস না।
পরিবারের কাছে এমন চিঠি লিখে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় নাজিম হাওলাদার(১৩) নামে ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার রাতে বসত ঘরের পিছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
আত্মহত্যার পূর্বে সে পরিবারের কাছে এ চিঠি লিখে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল হতে নিহত ওই স্কুল ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের অভাব অনটনে মনোকস্টে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে।
নিহত নাজিম হাওলাদার উপজেলার পূর্ব ভাণ্ডারিয়া গ্রামের দিনমজুর এস্কান্দার হাওলাদারের ছেলে । সে উপজেলার পূর্ব ধাওয়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে লেখাপড়া করে আসছিলো।
থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, নাজিমের দিনমজুর পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে অভাব অনটন চলে আসছিলো। এমন অবস্থায় তার মা দুরারোগ্য ব্যাধিতে শয্যাশায়ি। দিনমজুর পিতার পক্ষে পরিবারের ভরণপোষণে কস্ট বিরাজ করছিলো। তিন বোন আর অসুস্থ মায়ের দুরাবস্থার মাঝে নাজিমের লেখাপড়া নিয়ে চরম হতাশায় সে আত্মহত্য করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যার আগে সে তাঁর বাবার সাথে আছরের নামাজ আদায় করে। পরে পরিবারের কাছে চিঠি লিখে সে সকলের অগোচরে বসতঘরের পিছনে একটি জাম্বুরা গাছে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের লোকজন গাছে নাজিমের লাশ ঝুলতে দেখে থানায় খবর দেয় পরে পুলিশ ও স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাকসুদুর রহমান বলেন, ওই স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় এবং পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।