শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন
খায়রুল আলম রফিক বিশেষ প্রতিনিধি
মানছেন না নিষেধাজ্ঞা, দিচ্ছেন বাড়ি ভাড়া। অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করছেন দেদারছে। রেলওয়ের উচ্চমান সহকারী আব্দুর রহিম ভুইয়ার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তারই এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আব্দুর রহিম ভুইয়া শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনীতে এসইএসপি/২ এফ বাড়িটি বসবাসের জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন। ওই বাড়িতে রহিম ভুইয়ার পরিবারের বাস করার কথা।
কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বহিরাগত তিন পরিবারের ৭ সদস্যকে। কথা হয় ভাড়াটিয়া নুরুল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে আমরা এই বাড়িতে বাস করছি। মাসিক ভাড়া গুণতে হয় ২৭ হাজার টাকা। আর প্রতি মাসের ১০ তারিখ এই ভাড়া নেন আব্দুর রহিম ভুইয়ার স্ত্রী নাসরিন আক্তার। রহিম ভুইয়ার পরিবারকে পাওয়া যায় কলোনীর বি/৯/১/জে বাড়িতে। তবে ওই বাড়িটি বরাদ্দ রেলওয়ের প্রধান বুকিং সহকারী সোহেল হোসেনের নামে। তাকে নামমাত্র ভাড়া দিয়ে ওই বাড়িতে বাস করছে এই পরিবার। বাড়ি বরাদ্দ বিধি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সরকারি আবাসনে বরাদ্দপ্রাপ্ত কর্মচারী ছাড়া বহিরাগত বা অন্য কারো কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার বিধান নেই। কিন্তু আব্দুর রহিম ভুইয়া সরকারি সেই বিধি-নিষেধকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করে বাড়তি আয়ের জন্য বহিরাগতদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।
গত বছর শেষের দিকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ.এম সালাহ উদ্দীন। পরে তার স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ডিইও-কে আহবায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আব্দুর রহিমকে তার নামে বরাদ্দ করা বাড়িতে তাকে বাস করতে কিংবা বাসা খালি করে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু ২ মাস অতিবাহিত হলেও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন। বাড়ি খালিও হয়নি।
এ নিয়ে কথা বললে আব্দুর রহিম ভুইয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। কেউ কোনো অভিযোগ দিলে আমার কিছু আসে-যায় না। আমি আমার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ঠিক রাখলেই চাকরিতে কেউ অসুবিধা করতে পারবে না। রহিমের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, বরাদ্দকৃত বাসায় আমার আত্মীয়-স্বজনরা ভাড়া থাকেন। ভাড়া দেওয়া কি দোষের কিছু? এখান থেকে আমার মেয়ের স্কুল কাছে তাই সোহেলের বাসায় ভাড়া থাকি। রেলওয়ের বিভাগীয় সংস্থাপন কর্মকর্তা নজরুল আজাদ বলেন, বরাদ্দকৃত বাসা ভাড়া কিংবা বহিরাহত রাখা শৃঙ্খলা ভঙ্গের মধ্য পরে। তবে তদন্তে প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে পরিবহণ কর্মকর্তা ময়েনুল ইসলাম বলেছেন, অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।