মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
বরিশালে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে পুলিশের এক কনস্টেবল আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর যেকোনো সময় জেলা পুলিশ লাইনসের নবনির্মিত ৬তলা ব্যারাক ভবনের ছাদে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকাল ১১টার পর বিষয়টি জানাজানি হলে কোতোয়ালী থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। নিহতের নাম হৃদয় চন্দ্র সাহা (২১)। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার চকদোষ গ্রামের সুকণ্ঠ চন্দ্র সাহার ছেলে। তিনি দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন। ১ বছর ৩ মাস আগে তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওই পুলিশ সদস্য জেলা পুলিশ লাইনসের ২ নম্বর গেটে সেন্ট্রি ডিউটিতে নিয়োজিত ছিলেন।
বরিশাল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কনস্টেবল হৃদয়ের ২ নম্বর গেটে সেন্ট্রি ডিউটি ছিল। এরপর ওই রাতের যেকোনো সময় ৬তলা ব্যারাক ভবনের ছাদে উঠে সে তার নামে ইস্যুকৃত চাইনিজ রাইফেল দিয়ে নিজের থুঁতনি বরাবর এক রাউন্ড গুলি করে। গুলিটি তার মস্তিষ্ক ভেদ করে বের হয়ে যায়। এ ঘটনার পর রাতভর তার মরদেহ পড়েছিল ব্যারাকের ছাদে। পাশেই পড়েছিল সরকারি অস্ত্রটি। গতকাল সকাল ১১টার দিকে ওই ব্যারাক ভবনের অন্য বাসিন্দারা ছাদে উঠে হৃদয়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে কর্মকর্তাদের জানায়। লাশের প্যান্টের পকেটে ৩টি চিরকুট পাওয়া যায়। একটিতে সবার উদ্দেশ্যে সে লিখেছে ‘তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’। অপরটিতে লিখেছে ‘বাবা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম’। তৃতীয় চিরকুটে সে ছোট ভাইকে তাদের ‘বাবাকে দেখভাল করার’ অনুরোধ জানিয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, হৃদয়ের প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগে এক তরুণীর ছবি যাওয়া গেছে। চাঁদপুরের ওই তরুণীর সঙ্গে হৃদয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২-৩ দিন আগে ওই তরুণীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। এতে রাগ-ক্ষোভ ও দুঃখে হতাশাগ্রস্ত হয়ে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করছেন তারা।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মো. রাসেল বলেন, সুরতহাল শেষে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি। এদিকে ব্যারাক ভবনে কনস্টেবল হৃদয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশের অন্য সদস্যদের মাঝে শোক নেমে এসেছে।
সুত্র মানবজমিন