শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন
বিদেশফেরত ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সামাজিক অনুসন্ধান ও প্রণোদনামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রেস নোট জারি করে গত ১ মার্চ থেকে যারা বিদেশ থেকে ফিরেছেন এবং পাসপোর্টের ঠিকানায় থাকছেন না, তাঁদের স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনা না মানলে ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮’সহ বিভিন্ন আইনে মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে গতকাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অর্ধশতাধিক থানার ওসি জানিয়েছেন, এখনো স্বেচ্ছায় বিদেশফেরত ব্যক্তিরা পুলিশকে তথ্য দিচ্ছেন না। ঢাকার প্রতিটি থানায় গতকাল দু-একজন করে তথ্য দিয়েছেন। তবে প্রবাসী বেশি থাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের থানাগুলোতে বিদেশফেরত ব্যক্তিরা কোনো তথ্য দিচ্ছেন না।
পুলিশ ও র্যাবের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, চলতি মাসে দেশে ফেরা দুই লাখ ৭৮ হজার ২৭৩ ব্যক্তির মধ্যে কয়েক হাজার পাসপোর্টের ঠিকানায় নেই। তারা পরিবর্তিত ঠিকানায় অনেকে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। আবার কেউ কেউ ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাফেরা করছেন। তাদের শনাক্ত করতে বিশেষ কৌশলে মাঠে নেমেছে পুলিশ। যারা অবস্থান জানান দিয়ে সতর্কভাবে থাকবেন, তাদের সহায়তা করবে পুলিশ। আর যারা আত্মগোপনে থাকবেন, তাদের আলাদা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা হবে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্টের স্থায়ী ঠিকানার আত্মীয়-স্বজন, জাতীয় পরিচয়পত্র, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও মোবাইল ফোন নাম্বার সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্তে কোনোভাবেই আত্মগোপনে থাকতে পারবেন না বিদেশফেরত ব্যক্তিরা। মূলত কয়েক দিন তাদের সময় দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
গতকাল এক ভিডিও বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সবাইকে নিষেধাজ্ঞা মানার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করুন, সরকারিভাবে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, আপনারা সেই নিষেধাজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন। আপনাদের সাময়িক কষ্ট হবে, কষ্ট হলেও এই জায়গা থেকে উত্তরণের আর কোনো উপায় নেই। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে প্রশাসনকে সহযোগিতা করব।’
গতকাল এক প্রেস নোটে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানা বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ১ মার্চ ২০২০ হতে এ যাবৎ বিদেশফেরত সকল সম্মানিত প্রবাসী নাগরিককে তাদের বর্তমান অবস্থানের নিকটস্থ থানায় অতিসত্বর যোগাযোগ করে তাদের বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্যথায়, তাদের বিরুদ্ধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি এবং প্রযোজ্য অন্যান্য আইনের উপযুক্ত ধারা মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমনকি প্রয়োজনে তাদের পাসপোর্ট রহিত করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রবাসী ব্যক্তিগণের পক্ষে অন্য কেউ থানায় যোগাযোগ করে উক্ত প্রবাসী ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণের অবস্থান ও ঠিকানা জানাতে পারবেন।