মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সমগ্র দেশ আজ স্থবির, বিপর্যস্ত জনজীবন। আর এ সংকটকালীন সময়ে দেবদূতের মতো পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় অসহায় ও কর্মহীন মানুষসহ নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষদের সহায়তায় পাশে দাঁড়িয়েছেন ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজুল ইসলাম মিরাজ। তিনি করোনা প্রতিরোধে উপজেলাবাসীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতেও রাখছেন বিশেষ ভূমিকা। আপদকালীন সময়ে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষায় তিনি প্রয়োজনীয় উপকরণ, সরঞ্জামাদি ও নগদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেছেন।
বর্তমান করোনা সংকট থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসরণ করে কর্মহীন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন মিরাজুল ইসলাম মিরাজ। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই মিরাজুল ইসলাম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে অসহায় ও কর্মহীন মানুষদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন।
বুধবার থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় নেতাকর্মীরা একযোগে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার পরিবারে এ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু করেছেন।
ভান্ডারিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মোট ৬৩টি ওয়ার্ডে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, হতদরিদ্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৪১ হাজার ৯৭১টি পরিবার (খানা) রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় আবাসন, আশ্রায়ন, গুচ্ছগ্রাম, ভাসমান এবং ভাড়াটিয়া মিলিয়ে আরও ৮ হাজার পরিবার রয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে পবিত্র রমজান মাসকে সমানে রেখে উল্লেখিত ৪৯ হাজার ৯৭১ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি মশুর ডাল, ১ কেজি ছোলা বুট, ১ কেজি চিড়া, ৫০০ গ্রাম চিনি, আধা লিটার সয়াবিন তৈল এবং ১টি করে সাবান পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এহসাম হাওলাদার জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম মিরাজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্য সামগ্রী উপহার দেয়া হচ্ছে। আজ বুধবার থেকে এসব খাদ্য সামগ্রী বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে দলীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে উপজেলার প্রতিটি ঘরেই এ খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানোর কাজ শেষ করা হবে। তিনি আরও জানান, বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া খাদ্য সামগ্রী কারও প্রয়োজন না হলে তিনি পাশ্ববর্তী অভাবী পরিবারের মাঝে তা বিতরণ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পররই ভান্ডারিয়া উপজেলাকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এসময় মিরাজুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপজেলার গণপরিবহনের চালক ও শ্রমিক, নিম্ন আয় ও হতদরিদ্রদের তালিকা করে ১৫ হাজার পরিবারের বাড়ীতে খাবার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন শ্রমজীবি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর তালিকা করে ১০ হাজার পরিবারের বাড়ীতে খাবার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়।উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি স্থানে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থ গ্রহণ করা হয়। উপজেলার ১০টি প্রবেশ পথে স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে জীবানু নাশক স্প্রে করাসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে নিয়মিত জীবানু নাশক স্প্রে করানো হচ্ছে।
উপজেলা পর্যায়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগের সমন্বয়ে প্রায় ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।
উপজেলা ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষার জন্য ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০০ পিস পিপিই, দুই হাজার পিস সার্জিক্যাল মাস্ক, পাঁচ হাজার পিস হ্যান্ডগ্লোভস, দুই শত লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, দুই শত পিস গগল্স, ২৫ পিস আধুনিক থার্মোমিটার প্রদানসহ প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয়ের জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে প্রদান করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম। এছাড়া জনসাধারণের সুরক্ষার জন্য
৫০ হাজার পিস মাস্ক, ২৫ হাজার পিস হ্যান্ডগ্লোভস, এক হাজার লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, দুই হাজার পিস এ্যাপ্রোন বিতরণ করা হয়েছে।