শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিরোজপুরে মাদক মামলায় ২ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড পিরোজপুরে ২৫ টি হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধার মালিকের নিকট হস্তান্তর করলো পুলিশ সুপার বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন পিরোজপুর সরকারী মহিলা কলেজে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের অনুমোদন পাওয়ায় আনন্দে র‌্যালী বিদ্যালয়ে একদিনের বেশি আসেনা প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার মন্ডল, ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ কাউখালীতে কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থীরা জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করছে ভান্ডারিয়া স্ত্রী ও শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী পলাতক ভান্ডারিয়ায় প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ উদ্ধার ইন্দুরকানীতে আড়াই কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কাউখালীতে কায়েদ ছাহেব হুজুরের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত Get prepared to explore the planet of naughty dating sites Get to know lonely ladies in ireland – find your perfect match today ভান্ডারিয়ায় পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে গণশুনানি ভান্ডারিয়ায় ব্যবসায়ীর কান কামড়ে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ How Exactly To Switch Your Own Situationship Into An Union ভান্ডারিয়ায় দুর্নীতির দায়ে ইউপি সদস্য বরখাস্ত ভান্ডারিয়ায় যুবক হত্যায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভান্ডারিয়ায় কীটনাশক পানে তরুনীর আত্মহত্যা ভান্ডারিয়ায় প্রধান অতিথির চেয়ার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের টানাটানি, তাফসির মাহফিল স্থগিত! প্রতিবাদে সকল দোকানপাট বন্ধ ঘোষনা কাউখালীতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভবন নির্মাণে অনিয়ম ১৭ বছর পরে দুদকের মামলা
কলাপাড়ায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরগাছ ও প্রিয় খেজুররস ॥

কলাপাড়ায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরগাছ ও প্রিয় খেজুররস ॥

কলাপাড়াসহ দখিনের জনপদের সাধারন মানুষের সবচাইতে প্রিয় খেজুরের রস গ্রাম-বাংলার একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্য উপাদানের নাম। বাঙালির প্রাণের অস্তিত্বের সাথে মিশে থাকা খেজুর রস সংগ্রহ এবং এর ব্যবহার চোখে পড়ে শীত মৌসুমে। এ সময় আমন ধানের আগমন ও রস সংগ্রহে ব্যস্ত থাকতে দেখা যেত গ্রামের মানুষগুলোকে। কিন্তু এখন কৃষকদের ধান কাটতে দেখা গেলেও খেজুররস সংগ্রহে দেখা মিলছে খুব কম সংখ্যক গাছীকে। কলাপাড়ার দুটি পৌরসভাসহ ১২ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার গাছিরা ইতোমধ্যে খেজুর গাছের মালিকদের সঙ্গে চুক্তিতে গাছ নিয়েছে। তারা এসব গাছ কেটে এখন রস সংগ্রহ করছেন পুরোদমে। যদিও আগের মতো শত শত খেজুর গাছের সারি আর দেখা যায় না। এরপরও যে গাছগুলো আছে শীত মৌসুমে সেই গাছগুলো থেকে রস সংগ্রহ করা হয়।

গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছ চেঁছে ও নলি বসিয়ে রস সংগ্রহ করে। পৌষ ও মাঘ মাস গাছ থেকে রস সংগ্রহ আর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন তারা। তাছাড়া খেজুরের গুড় দিয়ে মুড়ির মোয়া, চিরার মোয়া ও মুড়ি খাওয়ার জন্য কৃষক পরিবার থেকে শুর করে সর্বস্তরের মানুষের কাছে শীতের মৌসুম অতি প্রিয় হয়ে উঠেছে। গাছিরা খেজুরের গুড় তৈরি করে কলাপাড়ার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে ১২৫/১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। তবে, বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতি কেজি তরল খেজুর রসের দাম ২৫ টাকা এবং খেজুর মিঠাইয়ের মূল্য ১৩৫ টাকা। তারা প্রয়োজনীয় খাবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে যে অর্থ যোগায় তা দিয়ে চলে তাদের সংসার।

লালুয়া ইউনিয়নের পশুরবুনিয়া গ্রামের গাছি মো:আবদুল খালেক সিকদার, ছোনখোলা গ্রামের গাছি বাহাদুর, জহিরুল তালুকদার জানান, গাছ কাটার কাজ কষ্টের হলেও রস সংগ্রহে মজা রয়েছে। খেজুর গুড় গাছের মালিককে দেয়ার পর এবং নিজের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের চাহিদা মিটিয়ে গুড় বিক্রি করে যে অর্থ আসে তা দিয়ে সংসার বেশ ভালোই চলে। তবে শীতের তীব্রতা বাড়লে খেজুর রস বেশি পাওয়া যায় এবং রস আরও বেশি মিষ্টি হবে সেই সঙ্গে গুড়ও ভাল হবে। লালুয়া ইউনিয়নের এক ব্যাক্তি বলেন, খেজুরের গুড় তৈরিতে কোন প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার না করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।শিশুদের মেধা বিকাশে খেজুরের রস এবং গুড় অতুলনীয়। পিঠা, পুলি, পায়েশ, মুড়ি ও চিরার মোয়া তৈরিতে গ্রাম বাংলায় খেজুরের গুড় ব্যবহার হয়ে আসছে।ধানখালী ইউনিয়নের খেজুর গাছি ষাটোর্ধ্ব রহমান মিয়া জানান, খেজুর গুড়ের চাহিদা অনেক এখন তো গাছই নেই। তাই রসও কম হয়।

একই এলাকার আরেক গাছি ফজলু মুন্সী জানান, যে হারে ইটভাটা বাড়ছে, তাতে খেজুর গাছ না থাকারই কথা, আর কয়েক বছর অতিবাহিত হলে নতুন প্রজন্ম জানবেই না যে, খেজুর গাছ বলতে কিছু ছিল।যুগের পরিবর্তনে মানুষ একদিকে যেমন আধুনিক হচ্ছে। অন্যদিকে, অতীত ঐতিহ্যকে ভূলে যাচ্ছে সুযোগ-সুবিধার আশায়। মানুষ মনে করে খেজুর গাছ রোপণ করলে আয় কম, বছরে একবার খেজুর রস আসে। কিন্তু, তারস্থানে যদি অন্য কোন গাছ লাগানো হয় তাহলে সেগাছের কাঠ ও ফল দু’টিই লাভ করা যায়।কলাপাড়া উপজেলায় অতীতের তুলনায় প্রায় ৯০ ভাগ খেজুর গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যার কারণে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন গাছীরা।
সাধারণত, খেজুরের রস দিয়ে খেজুর মিঠাই, সেমাই, ফিরনি, বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি করা হয়। আর এগুলো তৈরিতে বিকল্প হিসেবে বর্তমানে চিনি ব্যবহার করা যায় বলে বিলুপ্ত হচ্ছে খেজুররস। এতে রয়েছে, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি-৬, ক্যালসিয়াম (ঈধ), ম্যাঙ্গানিজ (গহ), ম্যাগনেসিয়াম (গম), সালফার (ঝ), আয়রন (ঋব), পটাশিয়াম (কধ) এবং শর্করা, আমিষ ও পলিক এসিড। যা মানবদেহের সুস্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। কালের পরিক্রমায় দিন দিন মানুষের চাহিদা অন্যরকম হওয়াতে কমেই চলছে খেজুর গাছের সংখ্যা।
কলাপাড়া উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানান, আমরা কৃষকদের খেজুর গাছের বীজ রোপণে উৎসাহিত করি। বন বিভাগের খেজুর রোপণে আপাতত কোনো পদক্ষেপ নেই।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, খেজুর গাছ জন্মানোর জন্য যে মাটি প্রয়োজন, সে মাটি এখন আর নেই। এছাড়া খেজুর গাছের চেয়ে অন্য ফল গাছ রোপণে কৃষকদের লাভ বেশি হয়। তাই এখন আর কেউ খেজুর গাছ রোপণ করেন না। তবে, সরকারিভাবে পতিত জমিতে খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।


নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন













© All rights reserved © 2019 pirojpursomoy.com
Design By Rana