বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর কচা নদীর মোহনায় গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার লিলাভূমি। যেখানে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে চলছে নানা কর্মযজ্ঞ। উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের কচার মোহনায় পাঁচ একর জমিতে এই আয়োজন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখানে এক দিকে রয়েছে সুপ্রাচীন পাড়েরহাট বন্দর। আর একদিকে রয়েছে সূর্য প্রশন্ন বাজপেইর বিখ্যাত জমিদার বাড়ি। আবার তার বিপরীত দিকেই রয়েছে বাদুরা মত্স্য অবতরণকেন্দ্র। এছাড়াও এখানে রয়েছে রাসায়নিকমুক্ত শুঁটকি পল্লি। প্রভাতে কঁচা নদীর বুকচিরে যেমন সূর্য উদয় হয়। ঠিক তেমনি বেলাশেষে এখান থেকেই সূর্য অস্তের দৃশ্যও অবলোকনের সুযোগ রয়েছে। নদীতীরে আছড়ে পড়া ঢেউ দিবে আপনাকে ভিন্ন মাত্রার আনন্দ। এখান থেকে সামুদ্রিক মাছ ও শুঁটকি ক্রয়ের রয়েছে বিশেষ সুবিধা। এছাড়া ভোজনরসিকদের জন্য থাকছে কঁচা নদীর তাজা ইলিশের স্বাদ গ্রহণের সুযোগ।
এই নদী থেকেই নিয়মিত যাতায়াত করে ব্রিটিশ আমলের প্যাডেল স্টিমার। এছাড়াও সমুদ্রগামী মাছ ধরার বড়ো বড়ো ট্রলার এখান থেকেই যাত্রা শুরু করে। এমনকি আন্তর্জাতিক নৌ-রুটের বিদেশি জাহাজও চলাচল করে এই নদী থেকে। তাই এমন স্থানটিকে পর্যটকদের জন্য আরো সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে সহযোগিতা করেছেন এই আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, ইন্দুরকানী উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদরা। ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দরবনসংলগ্ন এই এলাকাটিকে আরো পর্যটনমুখী করতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানকার প্রবেশদ্বারের শুরুতেই রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য একটি টিকিট কাউন্টার। এর পরে থাকছে একটি কফি শপ, রেস্টুরেন্ট ও ওয়াচ টাওয়ার। এখানে সুন্দরবনের করমজলের মতো করেই পর্যটকদের পায়ে হাঁটার পথ করা হয়েছে কাঠের পাটাতন দিয়ে। ইতিমধ্যে এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ম্যানগ্রোভ জাতীয় বৃক্ষ রোপণের কাজ শুরু করা হয়েছে। নৌ-ভ্রমণের জন্য রাখা হবে দৃষ্টি নন্দন নৌকা। দর্শনার্থীদের প্রকৃতির একান্ত কাছে নিয়ে যেতে থাকছে ছোটো ছোটো দ্বীপ। যা দেখতে হবে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। নির্মাণাধীন স্থাপনাগুলো সবই হচ্ছে সুপারিগাছ ও বিভিন্ন ধরনের গাছের কাঠের তৈরি।
পার্কের নির্মাতা ডিজাইনার জানান, জলবায়ু দূষণের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ও প্রাণী জীবনাচার। তখন রাসায়নিকের ব্যবহার হ্রাস ও পরিবেশবান্ধব স্থাপনা নির্মাণই কেবল পরিত্রাণের উপায়। তাই আমাদের কাজের মাধ্যমে প্রকৃতি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমরা অধিক মনোযোগী হব। পার্কসংলগ্ন পাড়েরহাট আবাসনের বাসিন্দা দিনমজুর মোসলেম আলী শেখ জানান, পাড়েরহাটে পার্ক স্থাপনের কারণে আবাসনের ১৫০টি পরিবার নানামুখী কাজের সুযোগ পাবে। আবাসনবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন মোসলেম আলী।
পাড়েরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলো জেপির সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সরোয়ার বাবুল বলেন, ‘কচা নদীতীরে এই মনোরম পরিবেশে একটি ইকো-পার্ক তৈরি হলে পর্যটকের আগমন ঘটবে।
সূত্রঃ ইত্তেফাক