শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
কামরুল হাসান মুরাদ:: ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার কেওতা গ্রামের সুলতান মার্কেট এলাকায় বিরোধীর জমিতে ঘর উত্তোলনে বাধা দেয়ায় ২ শিশু সন্তানের জননীর আঙ্গুলের রগ কেটে দেয়াসহ হামলা মারধরের ঘটনায় শনিবার রাতে এবার উল্টো ওই ২ শিশু সন্তানের জননীসহ ৭ জনের নামে হামলা ও চুরির মামলা রেকর্ড করেছে রাজাপুর থানার পুলিশ। হামলায় হাতের আঙ্গুলের রগকাটা খাদিজা আক্তার সুখির ভাসুর মনির হাওলাদার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়েরের ১ দিন পর ওই মামলার ১ নম্বার আসামী সোহরাপ হোসেন নিজেই বাদি হয়ে এ মামলা করেন। রোববার সকালে ওই হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে ও হামলার বিচার চেয়ে এবং আসামী গ্রেফতারের দাবিতে কেওতা গ্রামের সুলতান মার্কেট এলাকায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। কেওতা গ্রামবাসী ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাসুদুর রহমান মিলন হাওলাদার, বাদল হাওলাদার, হাসিনা বেগম, কবির হাওলাদার, মাহবুব হাওলাদার ও তাজেল হাওলাদার প্রমুখ। মানববন্ধনে হাতের আঙ্গুলের রগকাটা খাদিজা আক্তার সুখির দুই মেয়ে ৩ বছর বয়সী মারিয়া ও ৪ মাস বয়সী সারিয়া উপস্থিত ছিলো। ওই দুই শিশুর মা বর্তমানে বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। মানববন্ধনে দখলবাজ সোহরাপ ও রফিকুল বাহিনীর হাত থেকে কেওতাবাসি রক্ষা পেতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিরোধীয় জমিতে ৮ মে সকালে প্রতিপক্ষরা ঘর উত্তোলন করতে গেলে তাতে বাধা দেওয়ায় দুই শিশু সন্তাানের জননী খাদিজা আক্তার সুখি ডান হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের রগ কেটে দেয়া দেয় এবং তার স্বামী-ভাসুরসহ কয়েকজনকে মারধর ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় কেওতা গ্রামের মৃত শুক্কুর হাওলাদারের ছেলে মনির হাওলাদার বাদি হয়ে ৮ মে রাজাপুর থানায় মামলা (নং ৫) দায়ের করেন। এ মামলায় সোহরাপ হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মাসুম, দুলাল, আকসানসহ ৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলার বাদি মনির হাওলাদার অভিযোগ করে জানান, মামলা দায়ের পর একাধিক বার পুলিশকে আসামী ধরতে বলা হলেও পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেফতার করেনি বরং আসামীরা থানায় ঘোরাফেরা করেছে। উল্টো তার মামলা দায়েরের ১ দিন পর ৯ মে মনিরের মামলার ১ নম্বর আসামী সোহরাব বাদি হয়ে তাকে (মনির) সহ তার ভাই বাদল, বাদলের স্ত্রী হাতের আঙ্গুলের রগকাটা সুখি, বাদলের বোন হাসিনা বেগম, হাসিনার স্বামী রিক্সা চালক সিদ্দিক হাওলাদার, কলেজ ছাত্র শফিকুল ইসলাম ও কমিউনিটি পুলিশিং ইউনিয়ন সেক্রেটারি মিলন হাওলাদারকে আসামী করে মারধর ও চুরির মিথ্যা মামলা (নং ৭) দায়ের করেছে। কমিউনিটি পুলিশিং শুক্তাগড় ইউনিয়ন সেক্রেটারি মিলন হাওলাদার জানান, তিনি কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সেক্রেটারি হওয়ায় এ ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থুলে গিয়ে মিলনকে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিলনকে আসামী করা হয়েছে এবং এ মামলায় মিলনের জীবিত বাবা নাসির আহম্মেদকে মৃত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান মিলন। এছাড়া তাজেল ও হানিফকে এ মিথ্যা মামলায় স্বাক্ষী রাখারও প্রতিবাদ করে বক্তব্য দেন মানববন্ধনে। অভিযুক্ত সোহরাব হোসেন ও রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তাদের মাত্রিক জমিতে তারা রিক্সার গ্যারেজ করতে গেলে প্রতিপক্ষরা বাধা দেয় এবং তাদের মারধর করে। এ ঘটনায় তারা মামলা করেছেন। উভয় মামলার আইও রাজাপুর থানার এসআই মোঃ আঃ রৌফ জানান, মামলা রেকর্ডের করেন ওসি মহোদয়। আইও হিসেবে মামলার কপি পাওয়ার পর প্রথম মামলার তদন্তে শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং দ্বিতীয় মামলার কপি পাওয়ার পর রোববার ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছি। তবে উভয় মামলায় কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।