শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সৃষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিশু, বিশেষত যারা শহর বা গ্রামের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ এর কোভিড-১৯ র্যাপিডইমপ্যাক্ট এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন মতে, দেশব্যাপী সরকার ঘোষিত প্রায় ৯০ দিনে লকডাউনেকার্যত অর্থনৈতিককর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়ায়, দেশের প্রায় ৯৫ ভাগ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । এদের মধ্যে মধ্যে দৈনিক উপার্জন বা ব্যবসাবন্ধ থাকায় ৭৮.৩ ভাগ পরিবারের উপার্জন কমে যাওয়ায় মানুষ চরম সংকটে পড়েছেন ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪৫ ভাগ শিশু, যার মধ্যে ৪৬ ভাগ দ্রারিদ্র এবং এর এক-চতুর্থাংশ অতিদারিদ্রতার মধ্যে বেড়ে উঠছে।
এ বিষয়ে সংস্থাটির অন্তর্বর্তীকালীন ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন গোমেজ বলেন, “আমরা শংকিত, বিশেষত ৫ বছরের কম বয়সী সেই সকল শিশুদের নিয়ে যারা অপুষ্টিরমত প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমনের ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা দেশে শিশু মৃত্যুর হার বাড়িয়ে তুলতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, দেশের ২৬টি জেলার ৫৭টি উপজেলার আমাদের কর্ম এলাকাগুলোতে আমরা দেখেছি খাদ্য সংকটের কারণে অপুষ্টির মত সমস্যাগুলোতে শিশুরা অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, জরিপ এলাকার ৯৪.৭ ভাগ পরিবারে খুব সামান্য অথবা কোন খাবার সঞ্চিত নেই যেখানে ৩৮.৫ ভাগ শিশুএবং ৫৮.৯ ভাগ প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যাক্তি দিনে সর্বোচ্চ দুইবেলা খেতে পারছেন। এছাড়া ৫৮ ভাগ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে।”
ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ এর প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৩৪ ভাগ পরিবাররান্না, ধোয়া-মোছা ও পান করার জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেনা। অন্যদিকে ৫০ ভাগ পরিবার স্বাস্থ্য বিধি উপকরণ এবং পরিষ্কার পানির অপর্যাপ্ততার কারণে সাবান দিয়ে হাত রাখতে পারছেনা। ৮৭ ভাগ শিশুদের নিয়ে যারা বাড়িতে থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে এবং ৯১.৫ ভাগ শিশু যারা কোভিড-১৯ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ । রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের শিশু এবংতাদের পাশর্^বর্তী জনবসতিসহ বাংলাদেশের সকল শিশুদের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সকল সমস্যা প্রভাবিত করছে তা সমাধানে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং এই সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় উপকরন ও সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন ।
ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ৮টিবিভাগের ৫২টি উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ১৬১৬ জনশিশুএবং ২৬৭১ জনপ্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যাক্তির উপর পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে র্যাপিডইমপ্যাক্ট এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনটি তৈরী করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ভিশনএকটি খ্রিস্টান মানবিক উন্নয়ন সংস্থা যা প্রায় ৫০ বছর ধরে শিশুপরিবার ও কমিউিনিটির সাথে দারিদ্র ও বৈষম্যে নির্মুলে কাজ করে যাচ্ছে । ধর্ম, বর্ণ গোত্র লিঙ্গ -নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য কাজ করে ওয়ার্ল্ড ভিশন ।