বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ন
এমন অবস্থায় মা শহানা বেগমের মরদেহ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে দুই ভাই সাইফুল ইসলাম ও আসাদ মল্লিক। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে মায়ের মরদেহ দাফনে অংশ নেয় তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে কাউখালী উপজেলার জোলাগাতি গ্রামে। সাইফুল ও আসাদ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন মল্লিকের ছেলে। তারা দুই ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর ভিটাবাড়ীয়া নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সাইফুল ও আসাদের পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। সকাল ১০টার আগে চোখ মুছতে মুছতে এই কেন্দ্রে আসে দুই ভাই। সহপাঠী ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয় তারা।
পরীক্ষা শুরুর আগে সাইফুল ও আসাদ জানায়, মা তাদের অনেক ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন দুই ভাই যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হয়। তাই এমন অবস্থায়ও পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। মায়ের আত্মাকে তারা কষ্ট দিতে চান না।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহানা বেগমের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর সংবাদে ভেঙে পড়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী দুই ছেলে সাইফুল ও আসাদ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মায়ের লাশের পাশে বসে থাকে এ দুই ভাই। স্বজনেরা তাদের নানাভাবে মা হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেন। পরে স্বজনদের কথায় মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে যায় দুই ভাই। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে তারা বের হয়ে মায়ের জানাজার জন্য বাড়িতে আসে। দুপুর ২টায় জানাজার নামাজের পর মায়ের দাফন সম্পন্ন হয়।
কেন্দ্র সচিব ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহমুদ চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ও আসাদ মল্লিক মা হারানোর বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। তার কক্ষের পর্যবেক্ষকসহ আমি কেন্দ্রে তার খোঁজখবর রেখেছি। আমি কক্ষে গিয়ে তাদের খোঁজ নিয়েছি। সান্ত্বনা দিয়েছি। পরীক্ষার কক্ষে মাঝেমধ্যে কান্নায় ভেঙে পড়ে তারা। সহপাঠীরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তবে পরীক্ষা ভালো হয়েছে তাদের।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জহিরুল আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে। ওই পরীক্ষার্থীদের সান্ত্বনা দিয়েছি। তবে তাদের পরীক্ষা ভালো হয়েছে।