বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের সাবেক পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে মামলার শুনানী শেষে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহা: হেলাল উদ্দিন মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে এ নির্দেশ দিয়েছেন।
পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন তালুকদার কুমারকে বেআইনীভাবে থানায় ৩৮ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতনের পর অস্ত্র দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার অভিযোগে পিরোজপুরের সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান এবং সদর থানার সাবেক ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেনসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৮ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন তালুকদার কুমার পিরোজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন, সদর থানার সাবেক এসআই মো. মনিরুল ইসলাম এবং ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. জুলফিকার আলী। এছাড়া আরও ৪/৫ জনকে এ মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে কুমার উল্লেখ্য করেন, ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর পৌরসভাধীন উত্তর কৃষ্ণনগরের বাড়ির সামনের রাস্তার উপর থেকে সাদা পোষাকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নেয়। এরপর রাত ১২টার দিকে তাকে টহল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরের দিন ভোরবেলা পুলিশ সদস্যরা হাতকড়া পড়ানোর পর কালো কাপড় দিয়ে তার দুই চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর মামলার প্রধান আসামী সদর থানার তৎকালীন ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন থানা হাজতের সামনে তাকে বেত দিয়ে মারাত্মকভাবে পিটাতে থাকে। ২/৩ মিনিট পিটানোর পর কুমার নিস্তেজ হয়ে পড়লে আবির তাকে লাথি দিতে থাকে। এরপর তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে এই ধরণের স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য ওসি তাকে চাপ দিতে থাকে। এরপর ওই দিন রাতে পুনরায় হাতকড়া পড়িয়ে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে তার বাড়ির কাছে একটি কবরস্থানে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর সেখান থেকে একটি অস্ত্র বের করে সেটি কুমারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছবি তোলে পুলিশ। পরবর্তীতে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দিয়ে তাকে পরের দিন আদালতে পাঠানো হয়।
কুমার জানান, তাকে থানার মধ্যে নির্মমভাবে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় আসামী করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। দীর্ঘ ৪ মাস কারাভোগের পর সে জেল থেকে মুক্তি পায়। এ বিষয়ে কুমারের আইনজীবী আকরাম আলী মোল্লা জানান, গত ২৮ আগস্ট মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। বুধবার শুনানী শেষে বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে।