মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
Best Gender Hookup Websites | FreeHookupsSites পিরোজপুরে মাদক মামলায় ২ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড পিরোজপুরে ২৫ টি হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধার মালিকের নিকট হস্তান্তর করলো পুলিশ সুপার বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন পিরোজপুর সরকারী মহিলা কলেজে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের অনুমোদন পাওয়ায় আনন্দে র‌্যালী বিদ্যালয়ে একদিনের বেশি আসেনা প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার মন্ডল, ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ কাউখালীতে কাজী হারুন অর রশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থীরা জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করছে ভান্ডারিয়া স্ত্রী ও শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী পলাতক ভান্ডারিয়ায় প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ উদ্ধার ইন্দুরকানীতে আড়াই কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কাউখালীতে কায়েদ ছাহেব হুজুরের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত Get prepared to explore the planet of naughty dating sites Get to know lonely ladies in ireland – find your perfect match today ভান্ডারিয়ায় পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে গণশুনানি ভান্ডারিয়ায় ব্যবসায়ীর কান কামড়ে বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ How Exactly To Switch Your Own Situationship Into An Union ভান্ডারিয়ায় দুর্নীতির দায়ে ইউপি সদস্য বরখাস্ত ভান্ডারিয়ায় যুবক হত্যায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভান্ডারিয়ায় কীটনাশক পানে তরুনীর আত্মহত্যা ভান্ডারিয়ায় প্রধান অতিথির চেয়ার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের টানাটানি, তাফসির মাহফিল স্থগিত! প্রতিবাদে সকল দোকানপাট বন্ধ ঘোষনা
কুড়িগ্রামের ডিসি প্রত্যাহার হতে পারেন

কুড়িগ্রামের ডিসি প্রত্যাহার হতে পারেন

গভীর রাতে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে আটক ও পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হলে প্রত্যাহার হতে পারেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীন।

এ ঘটনার পর রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কে. এম. তারিকুল ইসলাম এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্তে ডিসি দোষী প্রমাণিত হলে দুই এক দিনের মধ্যে প্রত্যাহার হতে পারেন বলে তদন্ত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করতে বলেন। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, জোর করে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে পারেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসন আইনের অপব্যবহার করে মোবাইল কোর্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন।

জানা যায়, শুক্রবার মধ্যরাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসার সদস্যদের একটি টিম কুড়িগ্রাম শহরের চড়ুয়াপাড়ায় বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের বাড়িতে হানা দেয়। এরপর মারধর করতে করতে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তার পোশাক খুলে দুই চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিসি কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন। এরপর  মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ও পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠান ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু বলেছেন, মধ্যরাতে বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে আরিফকে পেটানো, জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কোনো মাদক পাওয়া যায়নি।

অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে আটক করা হয় বলে দাবি করেছেন অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে শনিবার রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানাকে দিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির এই সদস্য তাৎক্ষণিকভাবে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করেছেন। তদন্ত শেষে শনিবারই প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনাররের কাছে জমা দিতে বলা হয়। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে বলেছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামও বলেছেন, বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে অতিরিক্ত কমিশনারকে ঘটনাস্থলে পাঠানোও হয়েছে।

রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কে. এম. তারিকুল ইসলাম বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা সরেজমিনে কাজ করছেন। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। যথাযথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে কিনা তদন্ত কর্মকর্তা সে বিষয়টি যাচাই করেছেন।

মোবাইল কোর্ট পরিচালনা পদ্ধতি সম্পর্কে আইনের ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সংক্ষিব্ধ অভিযোগ লিখিতভাবে গঠন করিয়া উহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠ ও ব্যাখ্যা করিয়া শুনাইবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ স্বীকার করিলে তাহার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করবেন। অভিযোগ অস্বীকার করিয়া আত্মপক্ষ সমর্থন সন্তোষজনক হইলে অব্যাহতি প্রদান করবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থন সন্তোষজনক না হলে নির্বাহী ম্যাজিট্রেস্ট তাকে বিচারিক আদালতে পাঠাবেন। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের কোনো বিধান না মেনে তাকে শাস্তি দিয়েছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে পারে না। গাঁজা-মদ যদি ঘরে থেকেও থাকে তবে তা নজরদারিতে রাখবে। মাদকদ্রব্য যদি কেউ লুকিয়ে রাখে তাহলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, ডিসির সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশের পর এমন ঘটনা ঘটলে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। এতে সন্দেহের অবকাশ নেই।

আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ বলেন, মোবাইল কোর্ট আইনের মাধ্যমে এটা করতে পারে না। এটি পুরোপুরি আইনের অপব্যবহার। এমন ঘটনা এর আগে বহুবার ঘটেছে। এজন্য আদালতে চ্যালেঞ্চ করা হয়েছে। আদালত সুষ্ঠু বিচার করেছেন। অনেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে শোকজও করা হয়েছে। কিন্তু আইনের এই অপব্যবহার কমেনি। তিনি বলেন, এজন্য সরকারকে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে মোবাইল কোর্ট আইনের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক পারভীন সুলতানা বলেন, অ্যাজ ইউজুয়াল টাস্ক ফোর্স অভিযানে গেছে। মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ অফিসের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আমার একজন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের কয়েকজন ফোর্স, ব্যাটালিয়ান আনসারের পাঁচজন আর মাদকদ্রবের তিনজন ছিলেন। তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ ছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই অভিযান হয়। মাদক দ্রব্যই আমাদের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছিল।

তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু জাফর বলেছেন, তিনি এলাকায় ছিলেন না। শনিবার দুপুরে কার্যালয়ের পরিদর্শক জাহিদ সাহেব তাকে জানিয়েছেন, রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অভিযানের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন তার নিজ নামে একটি পুকুর করেছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে রিপোর্ট করেছিলেন। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে ডিসির বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, আমার নামে কোনা পুকুরের নামকরণ হয়নি। এক বছর আগে এমন প্রতিবেদন করেছিলেন আরিফুল। এ জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। ওটা বিষয় না।

বিএফইউজে-ডিইউজে ও টিআইবির প্রতিবাদ: এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।

সংগঠন দুটি বলেছে, কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে বাসভবন থেকে একটি মহল তুলে নিয়ে যাওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।

শনিবার বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সাংবাদিক আরিফকে মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে আনার পর মোবাইল কোর্টে বিচার করে কারাদণ্ড দেওয়ার পুরো ঘটনাকেই বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। সে অনুযায়ী রাতের বেলা কোনো নাগরিককে ঘর থেকে তুলে এনে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অবৈধ।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়েছে। আরিফের মুক্তির দাবিতে শনিবার কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কে মানববন্ধন করেছেন কুড়িগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

সূএ: সমকাল

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন













© All rights reserved © 2019 pirojpursomoy.com
Design By Rana