শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
‘আব্বা, তুমি এতো দিন কই আছলায় ? তুমি কথা কওনা কেরে গো আব্বা । আমরা এখন কই যাইতাম গো আব্বা —। তুমি আমারে না কইয়া কই গেছলায় ? আম্মায়নু কইলা তুমি বেলে বাজারো …..গো আব্বা …”। জেলহাজতে অকালে মৃত্যুবরণকারী শাহীন আহম্মদের বড় কন্যা তন্নীর এমন বিলাপে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছিলো বৃহস্পতিবার। দর্শনার্থীরাও বিলাপ করে কেঁদেছেন। চোখের জল ঝরিয়েছেন তারাও। শাহীনের মরদেহ দেহটি যখন বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তখন পক্ষাঘাতে আক্রান্ত বাবা সালেহ আহম্মদ বিলাপ করেছেন। হাউ মাউ করে কেঁদেছেন।হত দরিদ্র সংসারে একমাত্র শাহীনই ছিলো ভরসা।তিনি বলেন, কি অপরাধে আমার সন্তানের এমন হলো,,,ইয়া মাবুদ আমি তোমার কাছে বিচার চাই।
জেলে থাকা অবস্থায় শাহীন বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মৃত্যুবরণ করেন। শাহীন আহম্মদের বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি ইউনিয়নের বড়াব্দা সাহেববাড়ি। তার বাবার নাম সালেহ আহম্মদ।তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক।এলাকাবাসিরা জানান, বাবা সালেহ আহাম্মদ প্যারালাইজড হবার কারনে শাহীন বাবার ব্যবসা প্রতিষ্টানের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এ ফার্মেসীটাই ছিলো তাদের সংসারের একমাত্র রুটিরুজির ভরসা। ১০ জুন করোনার কারনে বিকাল বেলা ফার্মেসী বন্ধ করে তিনি বাড়ির দিকে রওনা হন। পথিমধ্যে সানি নামের এক পরিচিত যুবক তার হাতে একটি ব্যাগ দিয়ে সেই ব্যাগটি তার নানীর হাতে পৌছে দেয়ার অনুরোধ করে। শাহীন সরল বিশ্বাসে সেই ব্যাগ নিয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ান। এরই মাঝে পুর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের একদল সদস্য শাহীনকে আটক করে। হবিগঞ্জে নিয়ে যায়। পরের দিন তাকে মাদকের মামলায় জেল হাজতে প্রেরন করে। ডিবি পুলিশের হাতে আটক হবার পর থেকে তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভোগেন কিন্তু করোনার কারনে কোন আত্মীয় স্বজন শাহীনের সাথে দেখা করতে ব্যর্থ হন।বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। শাহীনের মৃত্যুর বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শাহীন হৃদযন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। শাহীনের মামাতো ভাই সুমন মোল্লা বলেন, সানি নামের যে লোকটি তার হাতে ব্যাগ দিয়েছিলো সে ইয়াবা ব্যবসায়ী। সানিও বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। শাহীনের সাথে তার মনোমালিন্য চলছিলো পুর্ব থেকেই। এরই জেরে শাহীনকে সে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়।