জহির সিকদার ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবুল বাশার হাজারী(৪৯) কে সেবা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয় তার স্ত্রী সোহেলী আফরিন সুমি (৩৫)। শরীরে উপসর্গ দেখার পর স্ত্রী কে আলাদা থাকতে বলেছিল হাজারী কিন্তু স্ত্রী তা মানতে রাজী নয়, এক বিছানায় থেকেই স্বামীকে সেবা যত্ন করেছেন স্ত্রী। শুধু মাত্র ভালবাসার জন্যই এই দম্পতি করোনা জয় করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।
৪ জুলাই শনিবার দুপুরে করোনা জয়ের গল্প বলেছেন তারা।
ঢাকা বিটিসিএলে কর্মরত করোনা জয়ী আবুল বাশার হাজারী জানায়,গত রোজার ঈদের দিন ঢাকার মগবাজারের বাসায় তার শরীরে করোনার উপসর্গ জ্বর ও সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব হয়।স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি ও চলে যায়। এই অবস্থা বুঝতে পেরে তিনি স্ত্রী সুহেলা আফরিন সুমিকে আলাদা থাকতে বলেন।কিন্তু স্ত্রী সুমী এতে রাজি হয়নী।স্বামীর সাথে একই বিছানায় থেকে স্বামীর সেবাযত্ন শুরু করে সুমি। তিনদিন পর সুমীর শরীরে ও জ্বর আর ব্যাথা শুরু হয়।স্বাদগন্ধ চলে যায় তার থেকে ও। পরে আটদিন পর দুজনেই করোনার নমুনা দিলে ফলাফল পজিটিভ আসলে দুইজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।তারপরও হাল ছাড়েনী সুমি। একই রুমে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসার পাশাপাশি স্বামীর সেবা করতে থাকেন। তিনি আরো বলেন, হোম আইসোলেশনে থাকাবস্থায় সুমির মনোবল শক্ত থাকায় তার মনে করোনা ভয় ছিলনা। থাকা -খাওয়া সবকিছু একসাথে হওয়ায় করোনার ভয়ের চেয়ে তাদের মধ্যে ভালবাসার শক্তি ছিল বেশি । একে অপরকে সহযোগিতা করেছে তারা। পারে আস্তে আস্তে জ্বর ব্যাথা সেরে ওঠে , স্বাদগন্ধ ও পেতে থাকে। টানা ১৬দিন পর নমুনা দিলে তাদের দুইজনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর আরো ৭দিন হোমকোয়ারেন্টাইনে থেকে তৃতীয় বার নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে স্বাস্থ্যবিভাগ তাদের দুইজনকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করে।
তিনি আরো বলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তাকজিল খলিফা কাজল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান নাজিম, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়েছেন। তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আবুল বাশার হাজারীর স্ত্রী সোহেলী আফরিন সুমি বলেন,আল্লাহর উপর ভরসা রেখেই স্বামীর সেবা শুরু করেছি। করোনা আমাদেরকে আলাদা করতে পারবেনা। স্বামীর সেবা করতে গিয়ে মৃত্যু হলেও তার আপত্তি ছিলনা বলে ও জানান।