মোঃ জয়িাদুল হক, কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ত্রুটিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইনের ফলে উপজেলার প্রায় এক লক্ষ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হেয়ালিপনা, অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি না থাকায় এ সমস্ত লাইনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলেই এলাকায় সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন।
সরোজমিন, এলাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় যে মাননীয প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শতভাগ বিদ্যুত নিরশ্চিত করার জন্য দ্রæত গড়িতে লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এ করনে লাইনগুলোতে রয়েছে অনেক ধরনের ত্রুটি। বিভিন্ন গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যে সমস্ত জায়গায় কেবল তার দেওয়া প্রয়োজন ছিল তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎ লাইনের আশেপাশে থাকা যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ গাছ পালা আছে যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্তন করা প্রয়োজন তাহা সঠিকভাবে করা হয়নি।
এছাড়া নানা কারণে অনেক জায়গায় তারগুলো নিচুতে ঝুলে থাকা, গাছপালার সাথে তারের সংমিশ্রণ হওয়া, স্থান ও তার এর সঠিক দূরত্ব নিরূপণ না করে এবং পিলারের সঠিক সাইজ নির্ধারণ না করায় এবং বসানোর যে নিয়ম রয়েছে তা পালন না করায় এই দূর্ঘটনার হার দিয়ে বাড়ছে এবং মৃত্যুর মিছিলের পাল্লা ভারী হচ্ছে। কাউখালীর দাসেরকাঠী নামক স্থানে দেখা যায় ৩৩ হাজার ভোল্টের লাইন খালের এপার থেকে ওপারে যেতে যে খুঁটি বসানো হয়েছে তা খালের পাড়ের একেবারে নিচু জায়গায় বসানো হয়েছে। ওই খুটি সাইজে অনেক ছোট হওয়ায় মাথায় কাঠের জোড়াতালি দিয়ে তার টানা হয়েছে যা অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এইসব ত্রুটির কারণেই গত ৩ জুলাই আব্দুর রশিদ তালুকদার এই তারেই বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে মারা যান বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী মৃত্যুর বিচার দাবি করেন। এছাড়া উপজেলার কাউখালি স্বরূপকাঠি সড়কের কচুয়াকাঠি বেইলি বিজের সামনে রাস্তা পারাপারের তার একেবারেই নিচুতে অবস্থান করতেছে যার নিজ দিয়ে অত্যাধিক ঝুঁকি নিয়ে বাস-ট্রাক চলাচল করছে। উপজেলার ফলইবুনিয়া গ্রামে মুজিবুর রহমান খান অভিযোগ করেন তার দুটি বাগানের ভিতর দিয়ে দুইটি বিদ্যুতের লাইন নেওয়া হয়েছে যা অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে যেকোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পল্লী বিদ্যুৎ কে বারবার জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
উল্লেখ্য গত এক মাস পূর্বে বেকুটিয়া গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ তারে জড়িয়ে বাবুলাল সমদ্দার নামে এক যুবক মারা যায়। গত পহেলা জুলাই কাঠালিয়া গ্রামে আজাহার আলী ও তার স্ত্রী রেনু বেগম বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে মারা যান। গত ৩ জুলাই বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে মারা যান উপজেলার দাশেরকাঠী আব্দুর রশিদ তালুকদার। এবারে এব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের বরিশালে তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী দিপংকর মন্ডল ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে সম্পর্কে তার জানা নেই, তিনি পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুতের জি.এম কে ঝুঁকিপূর্ণ লাইন চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ খালেদা খাতুন রেখা জানান উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ তার চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিদ্যুতের লাইনের পাশে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ গাছ গুলো কর্তন করে এবং জনগনকে সচেতন হওয়ার জন্য মাইকিং করে প্রচার করার ব্যবস্থ করা হবে।