শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:১৬ অপরাহ্ন
বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় স্ত্রী সালমা বেগমকে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তিন মাসের সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিএমপি পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সাইফুল বর্তমানে পুলিশ লাইনে কর্মরত থেকে মোবাইল টিমের ডিউটি করছেন। এবং স্ত্রী সালমা বেগম নগরীর কাউনিয়া থানার কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এরপূর্বে স্বামী সাইফুল ইসলাম একাধিকবার স্ত্রী সালমা বেগমকে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন সালমা বেগমের সহকর্মী পুলিশ সদস্য বকুলি বেগম।
নির্যাতিতা সালমা ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার গজারিয়া এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই জেলার সদর বাপ্তা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে।
বর্তমানে গুরুতর অবস্থায় সালমা বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সালমা রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়ার পথে, তবে পরীক্ষার রিপোর্টে পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে।
নির্যাতিতা সালমা বেগম জানান, ৪ বছর পূর্বে সালমা বেগমের সাথে পারিবারিকভাবে সাইফুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতে সাইফুল বিভিন্ন মেয়েদের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। কয়েকবার মোবাইল ফোনে ফেসবুকে প্রমাণ পায় সালমা। এরপর শুরু হয় সালমার ওপর নির্যাতন। শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহ কলহ থেকে প্রায় সময় সাংসারিক খুটিনাটি বিষয়ের জের ধরে একাধিকবার সালমাকে নির্যাতন চালায়। এমনকি নির্যাতন চালিয়ে সালমাকে অজ্ঞান করে ফেলে কয়েকবার। সন্তানের কথা চিন্তা করে বারবার স্বামীকে বুঝালেও কোনভাবে তা কর্ণপাত করেনি। বরং সে তার পরকীয়া চালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে সালমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বিয়ের চার বছরে এই পুলিশ দম্পতির একটি তিন বছরের সন্তান রয়েছে। চার বছরে চার মাসও স্বামীর সুখ পায়নি এমনটাই জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী সালমা। ঘটনার দিন গত শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কাউনিয়া এলাকার ৩ নম্বর গলিতে ভাড়া থাকা বসবাসরত বাসা থেকে বের হয়ে গিয়ে আবার একটু পরে চলে আসেন। দেরিতে দরজা খোলা নিয়ে আমার ওপরে নির্যাতন করে এবং লাথি মেরে আমার পেটের সন্তান নষ্ট করে দেয়।
পরে আমার সহকর্মী বকুলি আমাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে অভিযুক্ত স্বামী সাইফুল ইসলাম জানান, আমার স্ত্রীর সালমার ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে একটু ঝগড়া হয়, আমি তাকে চড়-থাপ্পড় দেই। পরকীয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার স্ত্রী সালমা প্রায় সময় আমাকে সন্দেহ করে- আমার সাথে ঝগড়া বিবাদ করে। আমার কর্তৃপক্ষকে আমি বিষয়টি জানাবো।’
এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মাতৃকালীন সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে আমি শুনেছি।
সুত্র বরিশাল ক্রাইম নিউজ