শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল দোকানি জাবেদ হাসানের (৪৮)। ঝগড়ার জেরে স্ত্রী বাড়ির দোতলা থেকে নেমে নিচে চলে যান। এ সময় পাষণ্ড বাবা জাবেদ হাসান ছুরি চালান মেয়ে জারিন হাসান রোজা (৬) ও ছেলে রিজনের (১৩) গলায়। এরপর নিজেও গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে বাবা ও দুই সন্তানকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজাকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বাবা ও ছেলে। গতকাল বুধবার বিকেলে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার বটতলার বোরহানপুরের ১০ নম্বর গলিতে। শিশুর চাচা মেহেদী হাসান জানান, নিজেদের দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস করেন জাবেদ। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে স্ত্রী বাসা থেকে বের হয়ে যান। এ সময় জাবেদ ভয়ংকর এই ঘটনা ঘটান। স্ত্রী রিমার গলার বাঁ পাশেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, মেয়েটির মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় আহতদের দেখতে ঢামেক হাসপাতালে যান ধানমণ্ডি জোনের এডিসি আব্দুল্লাহ হেল কাফি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মনে হচ্ছে কোনো সংকট থেকে এই নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছে। হতে পারে অর্থনৈতিক বা অন্য কিছু। আমরা তদন্ত করে তা দেখব। আমরা মৃত শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। এ জন্য আমরা তাঁকে নিয়ে যাচ্ছি।’ নির্মম এই ঘটনার কথা জেনে হাজারীবাগ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে গতকাল সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালে ছুটে আসেন। এলাকাবাসী জানায়, জাবেদ বাসার নিচে মোবাইলের দোকান করছিলেন। করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ ছাড়া স্ত্রীর সঙ্গেও ঝগড়াঝাঁটি চলছিল। এসব কারণে হয়তো জাবেদ তাঁর দুই সন্তানের গলায় ছুরি চালিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে গতকাল রাতে কথা বলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, ব্যবসায় লস হওয়ায় তিনি ছয়-সাত লাখ টাকা ঋণ করেন। এ কারণে হতাশায় ভুগছিলেন।