শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে যুবদলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে উপজেলা যুবদল কর্তৃক আয়োজিত যুবদলের পৃথক দু’টি সাংগঠনিক সভা পুলিশি বাঁধায় স্থগিত করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় যুবদলের ঘরোয়া বৈঠকে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। তারা নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে এবং গুলি চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে যুবদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নবীনগর পৌর শহরের আলীয়াবাদ মদন মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার দিনব্যাপী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল নবীনগর উপজেলা শাখাথর সাংগঠনিক সভায় যোগ দিতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিম (২২ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাতে নবীনগর এসে পৌঁছালে বিভক্ত উপজেলা যুবদলের নেত-কর্মীরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের বরণ করতে গেলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, নবীনগর উপজেলা বিএনপি দলের সাংগঠনিক সভাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুব দলের দুটি গ্রুপ পৃথক পৃথক স্থানে সভা করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু কোনো পক্ষকেই সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ ।
উপজেলা বিএনপিথর একাংশের নেতা সাইদুল হক সাঈদ বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেও ছাত্রদলের মিটিং সহ একাধিক মিটিং মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।কিন্তু যুবদলের বিষয়টি তাপস গ্রুপের লোকজন ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। দলের নেতাকর্মীদের, সমালোচনা করে সাঈদ আরও বলেন,তারা দলের অনুপ্রবেশকারী,তারা দলের কখনোই ভালো চাইনি, তারা কখনো একথা চাইনি,অথবা দল সুসংগঠিত হোক সেটাও চায়না,তার জন্য তারা আজকে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
কাজী নাজমুল হোসেন তাপস বলেন, মরহুম সাংসদ আলহাজ্ব কাজী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সাহেব সহ বিগত যে দলেরই এমপি ছিলেন তারা কখনোই সহিংসতার রাজনীতি করেননি। এখানে যখনই প্রোগ্রাম হয়েছে, পাল্টাপাল্টি প্রোগ্রাম হলেও একজন প্রোগ্রাম শেষ করে আরেকজন প্রোগ্রাম করেছে। আর এই ধারাবাহিকতাটা নবীনগরে সবসময়ই ছিল। আর আমরা সবসমযই এ বিষয়ে শিথিল ছিলাম। যদি এখানে বিএনপিথর আর কোনো দ্বিতীয় পক্ষ থেকে থাকে তারা প্রোগ্রাম করবে তাদের মতো। সেখানে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না,এখনও নেই। আমাদের লক্ষ ছিল কেন্দ্রীয় নেতারা নবীনগরে এসেছেন তাদেরকে আপ্যায়ন করা। এবং ২১টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার বর্তমান ও ভবিষ্যতে আমার কর্মীদের বিষয়ে আলাপ চারিতা করা। সহিংসতার কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে কাজী নাজমুল হোসেন তাপস আরও বলেন, আমি বেঁচে থাকতে নবীনগরের মাটিতে আওয়ামী লীগ তো দূরের কথা, তারা নিজেদের সাথে কখনো ঝামেলা সৃষ্টি করবে না। আমার বাবা কাজী আনোয়ার হোসেন এই ইতিহাস কখনো রচনা করেননি। আর আমারও করার ইচ্ছে নেই।আমরা সম্প্রিতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী প্রতিহিংসায় নয়।
জেলা বিএনপির দাবি, পুলিশের লাঠিপেটা ও গুলিতে অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি টিম প্রধান জাকির হোসেন সিদ্দিকী, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, সহসভাপতি রাশেদুল হক রাশেদ, তাজুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ।
নবীনগর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত রুহুল আমিন জানান, যুবদলের আহবায়ক কমিটি একজায়গায় ভেন্যু করেছে। আরেকটি গ্রুপ যুগ্ম-আহ্বায়ক কমিটি অন্য জায়গায় করেছে। কোনটাই অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু একটি গ্রুপ (২২ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাতে ডাক বাংলাতে জড়ো হয়েছে। আরেকটি গ্রুপ উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে জড়ো হয়েছে। দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল।কিন্তু কোনো পক্ষেরই অনুমতি না থাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাউকে সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পুলিশের এই চৌকস কর্মকর্তা।