শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ অপরাহ্ন
মোঃ রুম্মান হাওলাদার মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় কে,এম লতীফ ইনস্টিটিউশন এর প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের স্বেচ্ছাচারিতা আর্থিক অনিয়ম ও শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯ মাসের বেতন-ভাতা আটকে রাখার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১১ টার সময় কে,এম লতীফ সুপার মার্কেটের হোটেল মোগলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান। ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে গত ৬/০২/২০১৭ ইংরেজি তারিখে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই নিজের খামখেয়ালি মতই স্কুল পরিচালনা অপচেষ্টা সহ শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। এমনকি গত ১৯ মাস ধরে ফান্ড শূন্যের অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে রেখেছেন।
গত এক বছরে ডোনারশিপ বিক্রি, সেশন ফি, শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন, এসএসসি সনদ বাবদ,জেএসসি সনদ বাবদ, স্টল ভাড়া,ভর্তি ফর্ম,প্রশংসা পত্র বাবদ,শিক্ষক কোয়ার্টার ভাড়া, পুরাতন পরীক্ষার খাতা বিক্রি,অন্যান্য খাত থেকে আয়,গ্রাচুয়িটি সহ মোটা ১২৯৮০,০০০( এক কোটি ঊনত্রিশ লক্ষ) টাকা প্রায় কিন্তু ওই একই বছরে ব্যয় দেখানো হয় ৭৯৬০,০০০ টাকা প্রায়। যেখানে ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ -২০১৯ ইংরেজি সনে প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে ২ লক্ষ টাকা পেয়েছিল সেই টাকা থেকে নিজে একাই খেয়াল-খুশি মতো খরচ করেন। ২০১৯ সালে এনজিওর একটি সংস্থা সামিট বাবদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিদ্যালয় থেকে অপচয় করেছেন। বিদ্যালয় বর্তমানে প্রায় ৬৫০টি স্টল রয়েছে। উক্ত স্টল বরাদ্দের নামে প্রধান শিক্ষক ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়টিকে ডিজিটাইজেশন করার নামে একটি বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন কিন্তু এর সুফল শিক্ষার্থীরা না পাওয়ায় বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের ৫ হাজার খাতা ছাপানোর নামে নিম্নমানের কাগজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। ঐতিহ্যবাহী মুসলিম হোস্টেল প্রধান শিক্ষক দখল করে কোয়াটার হিসেবে ব্যবহার করায় হোস্টেলটি চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক বিগত মটরসাইকেল ব্যবহার করলেও ভাউচার দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। গত ৪/৪/২০২০ ইংরেজি তারিখে কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও বিদ্যালয়ের আয়ের একাউন্টে জমা না করে ইচ্ছেমতো খরচ করেন। প্রধান শিক্ষক ছাত্রদের লাথি মেরে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টিকে বিতর্কিত করেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকদের কথায় কথায় ফাঁকিবাজ,হারামখোর অযোগ্য অথর্ব বলে গালাগাল করেন। প্রধান শিক্ষক মামলার নামে পকেট কমিটি টিকিয়ে রাখার জন্য অনৈতিক চেষ্টা করে আসছেন। স্কুলের টাকা দিয়ে নির্মিত অর্ধকোটি টাকার বিলাসবহুল বাসায় বিনা ভাড়ায় সুবিধা ভোগ করলেও সহকারী শিক্ষকদের কোয়াটারে থাকার জন্য এক লক্ষ টাকা জামানত নেন এবং মাসে ২,৫০০ টাকা ভাড়া নেন। গ্রাচুয়িটি বাবদ ১ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক ৫ টাকা হারে নেয়া হয়। যা শিক্ষকদের অবসর সময় দেওয়া হয় কিন্তু উক্ত প্রধান শিক্ষক উন্নয়নের নামে এই টাকা ব্যয় করে আত্মসাৎ করেন। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা জামান খান প্রায় এক কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাওনা রেখে জান। বর্তমান প্রধান শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান উক্ত পাওনা টাকা আদায় করে ভূতুড়ে ব্রাউজারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা ৫ দফা দাবি করেন দাবির মধ্যে প্রথম দফা হলো অবিলম্বে বিদ্যালয়ের সকল হিসেবে স্বচ্ছতা সহ সকল শিক্ষক কর্মচারীদের বিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত সকল বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কমিটি সংক্রান্ত আদালতের অযৌক্তিক ও হাস্যকর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির পূর্বক বিধি মোতাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠন করতে হবে। বিদ্যালয়ের আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিদ্যালয় শিক্ষা স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। দ্রুত নির্মিত ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।