শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে আরেকটি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার জন্ম নিবে ভাণ্ডারিয়ায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য, স্বামী পলাতক বিএনপি সবসময়ই ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে -মাহমুদ হোসেন পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা
নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাংচুর ও হামলা ঘটনায় ৪বছরে আটটি মামলা

নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাংচুর ও হামলা ঘটনায় ৪বছরে আটটি মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা

আজ ৩০ অক্টোবর। দেশবিদেশে আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাংচুর ও হামলার ঘটনার ৪বছর পূর্ন হল। ২০১৬ সালের এই দিনে নাসিরনগরে ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগে হামলা চালিয়েছিল দূর্বৃত্তরা। ঐ হামলায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয় ভাংচুর করেছিল দূর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় তখন আলাদা ভাবে আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আটটি মামলার মধ্যে মাত্র একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ প্রশাসন।
তবে ঘটনার চার বছর পার হয়ে গেলেও বাকি সাতটি মামলার তদন্ত কাজ এখনও শেষ হয়নী বা পুলিশ প্রশাসন তা শেষ করতে পারেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসের ফেসবুক আইডি থেকে পবিত্র কাবা শরিফকে ব্যাঙ্গ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ২৯ অক্টোবর রসরাজকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু রসরাজ তখন পুলিশের কাছে ওই পোস্ট সে করেননি বলে দাবি করেন।

পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার অভিযোগ তুলে রসরাজের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে সমস্ত নাসিরনগরবাসী। ৩০ অক্টোবর উপজেলা সদরে সে সময়ে দুইটি ইসলামী সংগঠন সমাবেশের ও ডাক দেয়।

সমাবেশ শেষে হিন্দু অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি এলাকায় ঐ সংগঠনের জমায়েতকৃত লোকজন তাদের উপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি মন্দির ও শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা। এরপর দ্বীতিয় দফায় ৪ নভেম্বর ও ১৩ নভেম্বর দুই দফায় হিন্দুদের অন্তত ছয়টি ঘর-বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।

দূর্বৃত্তদের দ্বারা চালানো হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় পৃথক আটটি মামলা দায়ের করা হয়। তখন ঐ মামলায় অজ্ঞাত দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পরপরই হামলার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে পুলিশ ১২৫ জনকে গ্রেফতার করে।

উক্ত ঘটনার ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর নাসিরনগর উপজেলা সদরের গৌরমন্দির ভাঙচুর মামলায় নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিসহ ২২৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তবে ঘটনার চার বছর পেরিয়ে গেলেও বাকি সাত মামলার তদন্ত কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি পুলিশ।

নাসিরনগর উপজেলা সদরের দত্তবাড়ি মন্দির ভাঙচুর মামলার বাদী কাজল জ্যোতি দত্ত বলেন, আমার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছেন গৌরমন্দির মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমার মামলার অভিযোগপত্রও দেয়া হবে। এ বলেই আমাকে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে। তবে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি ফিরে এসেছে। আমাদের কারো প্রতি কোনো বিদ্বেষ নেই। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের যেন বিচার হয়।

স্থানীয় গৌর মন্দির পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রতন কুমার দাস বলেন, কী কারণে আমাদের মন্দির ও ঘরবাড়ি ভাঙলো তার কারন আমরা আজও জানতে পারলাম না। চার বছরে পেরিয়ে গেলেও আজ ও আমরা সেই হামলার বিচার পাইনি। আমরা এখনও বিচারের অপেক্ষায় আছি। আমরা চাই যারা এই হামলার সাথে প্রকৃতপক্ষে জড়িত তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের রায় দেয়া হোক।

নাসিরনগর উপজেলা সদরের দত্তপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলরাম দত্ত বলেন, তারা (দুর্বৃত্তরা) সভা থেকে এসে আমাদের মন্দির ও বাড়িতে হঠাৎ করে হামলা চালায়। দূর্বৃত্তরা আমাদের বাড়ির দেয়াল টপকে বাড়িতে ঢোকে পড়ে। আশপাশের মুসলামানরা আমাদের রক্ষা করার চেষ্টা ও করেছে। আমরা ও চেষ্টা করছি হামলার কথা ভুলে থাকার জন্য। কিন্তু চেষ্টা করলেও সেই দিনের সেই হামলার কথা কিছুতেই ভূলা যায় না। দেশের আইনে আমরা এ পর্যন্ত কোনো বিচারই তো পাইনী। আমরা যেন সবার সঙ্গে একত্রে মিলেমিশে একসঙ্গে ভালোভাবে চলতে পারি সেটাই এখন আমাদের চাওয়া।

এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, মামলাগুলো খুবই স্পর্শকাতর। সেজন্য মামলা সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয় আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করছি। হামলার সাথে জড়িতদের আইন অনুযায়ী অবশ্যই বিচার হবে। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা এবং পেশাদারিত্ব দিয়ে মামলাগুলোর তদন্ত করছি। আশা করছি দ্রুত তদন্ত কাজ শেষ করে আদালতে সবগুলো মামলার অভিযোগপত্র জমা দিতে পারব বলে আশা প্রকাশ করছি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana