নেছারাবাদ প্রতিনিধি:

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম.কে. সবুর তালুকদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের পুরোনো লোহার পুলসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ স্থানীয়দের পক্ষ থেকে একাধিক দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো তদন্ত হয়নি। এতে ভুক্তভোগীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

সাগরকান্দা গ্রামের প্রবীণ নাগরিক মো. নিয়াজ তালুকদার অভিযোগ করেন, সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়নের ১৫টি পুরোনো লোহার পুল ও ৮নং ওয়ার্ডের একটি ব্রিজের গাইড ওয়ালের ইট বিক্রি করে অন্তত এক কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। এছাড়া টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটা, ভিজিডি ও এডিবিসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সাগরকান্দা স্কুল মাঠে বালু ভরাটের টাকাও তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, চেয়ারম্যান থাকাকালীন সবুর তালুকদার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অর্থে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে বিএনপি বা জামায়াতের সমর্থক হিসেবে পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হতো।

বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হুমাউন কবির বেপারি বলেন, “সবুর তালুকদার একসময় বিএনপির রাজনীতি করলেও পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ক্ষমতার দাপটে ভোট কারচুপি করে চেয়ারম্যান হন। তিনি পরিষদের বরাদ্দের অধিকাংশ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পুরোনো লোহার পুল বিক্রি করে ব্যক্তিগত গুদামে মজুত রাখতেন। এমনকি একবার গভীর রাতে সরকারি মালামাল বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েন।”

তিনি আরও জানান, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ১০০ মেট্রিক টন টিআর, কাবিখা ও কাবিটা থেকে টাকা উত্তোলনের প্রমাণ উপজেলা অফিসে সংরক্ষিত আছে। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় পরিষদের কোনো নথি বা হিসাবও বুঝিয়ে দেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সাবেক কয়েকজন ইউপি সদস্যের অভিযোগ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুদানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থও আত্মসাৎ করেছিলেন সবুর তালুকদার। এমনকি তারা তৎকালীন ইউএনও’র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তবে অভিযোগের বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান এম.কে. সবুর তালুকদার বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। পরিষদের পুরোনো লোহার পুলের মালামাল আমার ব্যক্তিগত গুদামে রাখা হয়েছিল শুধু সুবিধার জন্য। পরে আমি নতুন চেয়ারম্যানকে সেগুলো বুঝিয়ে দিয়েছি।”