বার্তা রিপোর্ট : পিরোজপুরে মঠবাড়িয়ায় কলি বেগম (৩৯) নামে এক নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে কাজীর সহযোগিতায় তালাক দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী রিয়াজ উদ্দিন ছত্তারসহ তার পরিবার ও কাজীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পরে অসহায় ওই নারী বিভিন্ন দ্বারে-দ্বারে ঘুরছে। কলি বেগম উপজেলার তুষখালী গ্রামের নূরুল ইসলাম হাওলাদারের মেয়ে।
ভূক্তভোগী কলি বেগম ও তার পিতা নূরুল ইসলাম জানান, মাত্র ৬ মাস আগে উপজেলার পশ্চিম পাতাকাটা গ্রামের আবুল কালাম আকনের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন ছত্তারের সাথে পারিবারিক ও আনুষ্ঠানিক ভাবে কলির বিয়ে হয়। বিয়ের ১ মাস যেতে না যেতেই কলির ওপর যৌতুকের চাপ দেয়াসহ বিভিন্ন মানুষিক নির্যাতন করা হয়। এতে কলি বেগম রাগ করে পিতার বাড়িতে চলে আসে। এদিকে রিয়াজের সুচতুর বোন সালমা ও ভগ্নিপতি নূর আলম বিভিন্ন মিষ্টি কথাবলে কলি বেগমকে পিতার বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এভাবে কয়েক মাস খুব কস্টে কাঁটে কলি বেগমের সংসার জীবন।
গত ৮মার্চ কলি বেগমকে তার স্বামী একটা সমিতি থেকে লোন টাকা তুলবে বলে মঠবাড়িয়া পৌর শহরে নিয়ে এসে একটি ঘরে বসে স্বাক্ষর নেয়। পরে বিভিন্ন ফল ও মিস্টি সহকারে কলি বেগমকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসে প্রতারক রিয়াজ। দুপুরের খাবার খেয়ে কলি বেগমকে বাবার বাড়িতে রেখে জারুরী কাজের অজুহাত দিয়ে রিয়াজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। পরের দিন রিয়াজ তার বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যায়। এর পর কলি বেগম তার স্বামীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রিয়াজ ফোন রিসিভড করেনা। সম্প্রতি কলির পিতা নূরুল ইসলাম হাওলাদার রিয়াজের মুঠোফোনে কল করলে অপরপ্রান্ত থেকে জনৈক এক ব্যক্তি জানায় কলি বেগম তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়াছে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ইয়াকুব কাজীর মাধ্যমে। নূরুল ইসলাম হাওলাদার অসহায়ের মতো কাজির সাথে যোগাযোগ করলে কাজী অকপটে খোলা তালাকের কথা স্বীকার করেন।
এব্যপারে জানতে রিয়াজ উদ্দিন ছত্তারের মুঠোফোনে একাধিক কল করলেও তিনি রিসিভড করেনি। রিয়াজের বোন সালমা বেগম জানান,কলি বেগম তার ভাইয়ের সংসার করবেনা তাই সে ডিভোর্স করেছে। কৌশলে কলি বেগমের সহি নেয়া হয়েছে ! এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।
ইয়াকুব কাজী জানান, স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজন আমার অফিসে খোলা তালাকের জন্য এসেছে। শরীয়াহ্ মোতাবেক আমি তালাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। একটা সমিতি থেকে লোন টাকা তুলবে বলে কলি বেগমের কাছ থেকে সহি নেয় হয়েছে বিষয়টি আপনি জানেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার স্বামী প্রতারণ করলে আইনি ব্যবস্থার জন্য আমি মেয়ে পক্ষকে সহযোগিতা করতে পারবো। আপনি যাচাই না করে কিভাবে এটা করলেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শরীয়াহ্ মোতাবেক প্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী-স্ত্রী ও একজন স্বাক্ষী হলেই খোলা তালাক দেয়া যায়। আমি অহোরহ এটা করে থাকি বলে দ্রæত লাইনটি কেঁটে দেন।
প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে কলি বেগমের পিতা নূরুল ইসলাম হাওলাদার জানান।