শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ন
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, হাওরে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ঝকঝকে ধান দেখে ও ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি। হাওরাঞ্চলে এ পর্যন্ত ৬৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকা গভীর ও ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আনন্দের কথা সুনামগঞ্জ জেলায় ৭৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী হাওরের প্রতি গুরুত্ব জাগিয়ে তোলায় অল্প সময়ে এবার ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। সবাই সচেতনভাবে ধান কাটছেন।
আজ বুধবার দুপুরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাংহাই হাওরের ধান কাটা কার্যক্রম পরিদর্শন করতে এসে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী পরে সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুরে বোরা ধান সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করেন। পরে তিনি তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ধানকাটা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত প্রমুখ।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছিল এক সময় খাদ্য ঘাটতির দেশ। দুর্ভিক্ষের দেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখানে ফসল নষ্ট হতো। কিন্তু আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এবারের বোরো ফসলও মাঠে। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকরা খুশি। দামও ভালো পাচ্ছে।
হাওরে শ্রমিক সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনার কারণে বাইরের শ্রমিকরা এবার আসতে সমস্যা হয়েছে। আমরা বিশেষ ব্যবস্থায় প্রশাসনের সহায়তায় শ্রমিক নিয়ে এসেছি। এখন হাওরাঞ্চলে ৩ লক্ষ ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। ধানকাটা আরো ত্বরান্বিত করতে চারশটির বেশি কম্বাইন হার্ভেস্টর মেশিন মাঠে কাজ করছে। যা ধান কাটছে দ্রুততার সঙ্গে।
মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর হাওরে বজ্রপাতে শ্রমিক মারা যায়। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারকে কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে সহায়তা দেন। শ্রমিকের পরিবার বড় হলে আরো বাড়াবেন। তাছাড়া সুনামগঞ্জ জেলা থেকে কৃষক পর্যায়ে ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো যায় কি না তা আগামীকাল সভায় আলোচনা হবে।
ধান সংগ্রহের অনিয়ম হবেনা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, এ বছর ধান সংগ্রহ নিয়ে অনিয়ম হবেনা। কোনো মধ্যসত্ত্বভোগী আসার সুযোগ পাবে না। আমরা ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র ও প্রন্তিক কৃষকের তালিকা করে দিয়েছি। এই তালিকা এদিক সেদিক করতে পারবে না। ২২টি জেলা থেকে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান কেনা হবে। এবার ৮ লক্ষ মে.টন ধান চাষির কাছ থেকে সরাসরি কিনব। ভালো দাম পাবেন। ন্যায্যমূল্য পাবেন কৃষক।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই পর্যায়ে ধান কাটার আধুনিক ও উন্নত মেশিন দিয়েছেন। এখন হাওরের ধান কাটার পরিস্থিতি খুব ভালো। আবহাওয়াও সুন্দর। তাই এবার পুরো ধান কাটতে সক্ষম হবেন কৃষক।
কৃষিতে প্রণোদনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেয় সার, বীজ, বিদ্যুতে। আগামী আউশ মওসুমেরও জন্যও আমরা বিনামূল্যে ৬ হাজার টন আউশের বীজ ও সার পাঠিয়েছি। মন্ত্রী বলেন, আগামী আউশ ও গ্রীষ্মকালীন ফসলেও কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হবে। আগামী রবি ফসলেও প্রণোদনা দেব আমরা। তিনি বলেন, আগে ১৪ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ ছিল। যার সুদ ছিল ৯ ভাগ। এই সুদও চারভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে।