শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন তিনি। ফুসফুস তেমন কাজ করছিল না তার। অনেক দিন ধরেই ছিলেন কোমায়। স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ছিল খুবই গুরুতর অবস্থায়। এমন অবস্থায়ও নতুন প্রাণের জন্ম দিলেন কলম্বিয়ার ওই নারী। তার নাম দিয়ানা অ্যাঙ্গোলা। ছেলের নাম রাখা হয়েছে জেফারসন।
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে লড়তে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ৩৬ বছরের অ্যাঙ্গোলা। এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। খবর এএফপি’র। জানা গেছে, অ্যাঙ্গোলার ফুসফুস কাজ করছিল না বিধায় তার পেটের বাচ্চাকে বাঁচাতে হাসপাতালের সিজার সেকশনে নিয়ে যান চিকিৎসকেরা। অন্তত ১৪ সপ্তাহ আগেই পৃথিবীর আলোতে নিয়ে আসা হয় জেফারসনকে। মা করোনায় আক্রান্ত হলেও এই নবজাতকের শরীরে করোনার সংক্রমণ নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।পরিস্থিতি ‘অনেক সংকটজনক’ ছিল বলে জানালেন কলম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ক্যালি শহরের ভেরসালেস ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওলা ভেলাসকেস।তিনি বলেন, “আমরা জানতাম যে, এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও পেটের শিশুকে রক্ষা করার কিছু ঘটনা আমাদের এখানে রয়েছে।”অ্যাঙ্গোলা তীব্র জ্বর নিয়ে গত ১৫ মে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার আরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মাথায় চলে যান কোমায়। নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছিল তার।অপরিপক্ব থাকা অবস্থায় জন্ম নেওয়ায় জেফারসনেরও শ্বাস নিতে সমস্যা হতো বলে জানালেন চিকিৎসক। তাকে টিকিয়ে রাখতে অনেক লড়াই করতে হয়েছে।শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এডউইন ওলিভো বলেন, “আমাদেরকে পুরো প্রক্রিয়াটা একজন গুরুতর রোগীর চিকিৎসা করার মতো অনুসরণ করতে হয়েছে।”তিনি জানান, জেফারসনকে এখনো ইনকিউবিটরে রাখা হলেও দ্রুতই তার ওজন বাড়ছে। আরও সহজে শ্বাস নিতে পারছে।চিকিৎসক পাওলা ভেলাসকেস বললেন, “২৪ সপ্তাহ হলেই ভালো ওজনের কোনও মানব শিশু বাঁচিয়ে রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনেক টেকনোলোজি লাগবে, সেই সঙ্গে স্নায়বিক বিকাশ এবং ফুসফুসের প্রভাব সংক্রান্ত কাজগুলো ভালো করতে হবে।”এদিকে, সুখবর হল অ্যাঙ্গোলাও এরই মধ্যে করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন। ছেলেকে জেফারসনকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতে তর সইছে না তার।ভাঙা ভাঙা সুরে বলছিলেন, “আমাদের লড়াই করতে হয়েছে, ডাক্তাররা আমাদের বাঁচাতে সহযোগিতা করেছেন এটা জেনে খুব আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম।”অ্যাঙ্গোলা জানান, করোনাভাইরাসে কিভাবে সংক্রমিত হয়েছেন এটা তিনি জানেন না। বরং লকডাউনের সময়ে তার পরিবার তাকে কড়াকড়ি অবস্থার মধ্যে রাখে।