জহির সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা

প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতার তালিকায় স্বজনদের প্রাধান্য দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলম মিয়া । এখন আবার তার বিরুদ্ধেই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ।তুমুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন পরিষদের বরখাস্তকৃত এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

প্রায় দুই ডজন প্রকল্পে অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আজহারুর ইসলাম দুদকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এম.পি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক ও কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রেরণ করা হয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কসবা উপজেলার ২নং মেহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলম মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ইতিমধ্যে তাকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। নারী কেলেঙ্কারি ও ঘুষ বাণিজ্যসহ নানান দুর্নীতিতে জড়িত আছেন তিনি। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ ও একই প্রকল্প বিভিন্ন নাম করে বারংবার বরাদ্দ দিয়েছেন। তার নিজের বাড়ির একটি সড়কেই একাধিকবার বিভিন্ন নামে প্রকল্প বরাদ্দ করেছেন। এসব প্রকল্পের অনিয়মে তাকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন কয়েকজন ইউপি সদস্য। প্রকল্পগুলোতে ইউপি সদস্যদের সভাপতি করা হলেও প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান নিজেই। কিছু প্রকল্পে ইউপি সদস্যকে সভাপতি করা হলেও তারা প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না। প্রকল্পগুলোর মধ্যে শিমরাইল উচ্চ বিদ্যালয় হতে হোসেন ডাক্তারের বাড়ি হয়ে বুড়ি নদী পর্যন্ত আলাদা আলাদা প্রকল্প কাগজে দেখালেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই এলাকায় কাজ করা হয়েছে শুধু একবার। ইউনিয়ন পরিষদের সেক্রেটারিয়েট টেবিল ও বেঞ্চ বানাতে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকার প্রকল্প দেখালেও শুধুমাত্র কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার কিনেছেন চেয়ারম্যান। পরিষদের জন্য স্মার্টফোন কিনতে ২০ হাজার টাকার প্রকল্প দেখিয়েছেন, কিন্তু কেনা হয়নি স্মার্টফোন।

স্থানীয় মেহারী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমি জানি শুধু আমাকে সভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া আমি আর কিছুই জানি না। প্রকল্পের চেক আনাসহ যাবতীয় কাজ চেয়ারম্যান নিজেই করেছেন।’ ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আবুল খায়ের বলেন, ‘কিছু প্রকল্পে আমি সভাপতি ছিলাম। ঐ সমস্ত প্রকল্পের কাজ ও করেছি। অভিযুক্ত ২ নং মেহারী ইউনিয়নের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান মো.আলম মিয়া কে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে ও তিনি রিসিভ করেননী।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুদকের কাছে করা অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি।

এতে আমার কোন এখতিয়ার নাই, যেহেতু অভিযোগটি দুদকের কাছে করা হয়েছে। যা কিছু তদন্ত করার এখন দুদকের লোকজনই করবে।