রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালীতে যৌতুক না পেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে লোহার পাইপ ও রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে পাষণ্ড স্বামী হাইরুল রাঢ়ী ওরুফে ইমরান রাঢ়ী (৩৫), শাশুড়ি আলেয়া বেগম (৬৪), জা হাওয়া বেগম (৪০) সহ অন্যরা।
এ ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামে আব্দুর রব রাঢ়ীর বসতঘরে। এ ঘটনায় জা হাওয়া বেগমকে আটক করলেও অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে স্থানীয় সাবেক মেম্বর ইস্কান্দার রাঢ়ী এবং বর্তমান মেম্বার বারেকের তদবিরে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পটুয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসারত চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানছুরা বেগম কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ৮ বছর আগে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামে আব্দুর রব রাঢ়ীর ছেলে হাইরুল রাঢ়ী ওরুফে ইমরান রাঢ়ী (৩৫) এর সঙ্গে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তার বিয়ে হয়। স্বামী হাইরুল রাঢ়ী ওরুফে ইমরান রাঢ়ীর ঔরসে তার গর্ভে একটি পুত্র সন্তান হয়। তার বয়স ৬ বছর। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও জা’ হাওয়া বেগমের কু-পরামর্শে তার স্বামী প্রায় সময় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে টাকা আনার জন্য বলে। টাকা দিতে না পারলে তাকে মারধর করে আসতো।ঘটনার দিন ২৯শে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকার করায় স্বামী ইমরান রাঢ়ী, শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও জা হাওয়া বেগম তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে লোহার রড ও লোহার পাইপ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থনে উপুর্যুপরি পিটিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় ৬ বছরের ছেলে কাছে আসলে ছেলের গায়ে পাইপের বাড়ি লাগে বলে জানান মানছুরা। পাষণ্ড স্বামী, শাশুড়ি ও জা ছেলেকে রেখে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। খবর পেয়ে বড় ভাই মিজানুর রহমান সিকদার, ছোট ভাই শাহিন সিকদার এলাকার একজন দফাদারকে সঙ্গে নিয়ে পরদিন মানছুরাকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে এবং লিখিত অভিযোগ করে মানছুরা।
পুলিশের এসআই রুনা মানছুরার গুরুতর অবস্থা দেখে তাকে তাড়াতাড়ি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন বলে বড় ভাই মিজানুর রহমান জানান। বিকেলে আসামি হাওয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসলে এলাকার দুই মেম্বর সালিশ বিচার করার কথা বলে হাওয়াকে ছাড়িয়ে নিয়েছে বলেও বড় ভাই মিজানুর রহমান জানান। এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে তদন্ত কর্মকর্তার মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সদর থানার ইনচার্জ ছুটিতে আছেন। তদন্ত অফিসার অভিযোগের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান।
সুত্র মানবজমিন