শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে আরেকটি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার জন্ম নিবে ভাণ্ডারিয়ায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য, স্বামী পলাতক বিএনপি সবসময়ই ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে -মাহমুদ হোসেন পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা
বাবার সঙ্গে বিরোধ, হাত বেঁধে শিশুকে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা! চাচা ও চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার

বাবার সঙ্গে বিরোধ, হাত বেঁধে শিশুকে নদীতে ডুবিয়ে হত্যা! চাচা ও চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার

মাগুরায় খুন হওয়া শিশু মাহিদের মা মর্জিনা বেগমসহ স্বজনদের আহাজারি।

মাগুরায় তালের ডোঙার সঙ্গে হাত বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর গতকাল রবিবার সদর উপজেলার বারাশিয়া এলাকায় নবগঙ্গা নদী থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর দায় স্বীকার করেছে শিশুটির এক চাচা ও তাঁর ছেলে। মাহিদ নামের সাত বছরের ওই শিশুটি বারাশিয়া গ্রামের মুজিবুর রহমান মোল্যার ছেলে। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্র ছিল।তিন বছর আগের একটি বিরোধের জের ধরে ওই গ্রামের আসলাম মোল্যা ও তাঁর ছেলে রোহান পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। মাহিদের বাবা মুজিবুর রহমান ও আসলাম দুজন সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই।

মাগুরার সদর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন জানান, তিন বছর আগে আসলাম মোল্যাকে নিয়ে গ্রামে সালিস বৈঠক হয়। তার পর থেকে মুজিবুরের সঙ্গে আসলামের বিরোধ চলছে। আসলাম ও তাঁর ছেলে রোহানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, প্রতিশোধ নিতে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত বুধবার সকালে মাহিদকে স্থানীয় নবগঙ্গা নদীতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি তালের ডোঙার সঙ্গে হাত বেঁধে শিশুটিকে ডুবিয়ে দেয়। খোঁজাখুঁজি করে মাহিদকে না পেয়ে ওই দিন রাতে মাগুরা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মুজিবুর রহমান। পরদিন মাহিদের নানা দুলাল হোসেনের কাছে মোবাইল ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার রোহানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রোহান হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়। শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ওই দিনই গ্রেপ্তার করা হয় তার বাবা আসলামকে। তাঁদের জবানবন্দি অনুযায়ী ওই দিন থেকে নবগঙ্গা নদীতে খুলনার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের দিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গতকাল দুপুর ২টায় মাহিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হয় তালের ডোঙাটি।

ওসি জানান, মাহিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার বাবা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

গতকাল দুপুরে মাহিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছেলের শোকে বুক চাপড়ে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মা মর্জিনা বেগম। একই অবস্থা মাহিদের বাবা মুজিবুর রহমানেরও। এই দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে মাহিদ তৃতীয়।

মর্জিনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘আমার মনি সহালে একটা গেঞ্জি গায়ে দিয়ে চলে গেল। আমি খাতি বললাম, খালো না। কত জায়গায় খুঁজলাম, পাইলাম না। আমার অতটুকুন ছাওয়ালরে যারা এরম হরে মারিছে তাগের ফাঁসি চাই আমি। ওইটুকুন শিশুর সঙ্গে তাগের কিসের শত্রুতা।’

মুজিবুর রহমান জানান, পেশায় তিনি নির্মাণ শ্রমিক। গত বুধবার বিকেলে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে তাঁকে জানানো হয় মাহিদকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে রাতেই তিনি মাগুরা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলেটা রোহানকে আপন ভাইয়ের মতো ভালোবাসত। এ কারণে সে ডাকা মাত্রই মাহিদ তার সাথে নদীতে চলে গেছে। আর ওই শয়তান জানোয়ারটা তারে ওইভাবে ডুবায়ে মারছে। আমি ওগের ফাঁসি চাই।’

মুজিবুর রহমান জানান, পুলিশের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন, ওই তালের ডোঙার সঙ্গে রোহান যখন মাহিদের হাত বেঁধে দিচ্ছিল, তখন সে জানতে চাইছিল, ‘ভাইয়া, তুমি আমার হাত বাঁধছ কেন?’ রোহান বলেছিল, ‘তুই সাঁতার জানিস না তো। তাই যাতে না ডুবিস সে জন্যে হাত বাঁধছি।’ এই কথা বলে সে ডোঙাটা পানিতে ডুবিয়ে দেয়। এ কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুজিবুর। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তিন বছর আগে নারীঘটিত সামান্য ঘটনায় তিনিসহ এলাকাবাসী আসলাম মোল্যাকে সালিস বৈঠকে ডেকেছিল। এ সময় তাঁদের গ্রামের নান্নু নামের একজন আসলামকে একটি চড় মারেন। এরপর তিনিসহ বৈঠকে থাকা সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আসলাম।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana