শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
আমাদের শিল্পী সমাজে হিংসা একটু বেশি, জেলাস বেশি। এই মনির খানের গান শুনলে আমার পা পড়ার কথা না, নাইন্টি সিক্স, তখন আমার অ্যালবাম বের হলেই সুপার ডুপার হিট। সাউন্ডটেক বাড়ি দিয়ে দিচ্ছে, সঙ্গীতা গাড়ি দিচ্ছে- এরকম অবস্থা আমার। আর আজকাল একটা গান হিট হলেই শিল্পীরা কথা বলে না, সেলফিও তোলে না। ভাব কি। মুই কি হনুরে… কথাগুলো বলছিলেন নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী। মনির খানের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের ২৫ বছর হয়ে গেল। আর এই সময়টাকে স্মরণ করার জন্য রাজধানীর কঁচিকাঁচারমেলা মেলা প্রাঙ্গনে সম্প্রত মনির খানের অনুরাগীরা আয়োজন করেছিলেন ২৫ বছর পূর্তি উৎসব। সেখানে উপস্থিত হয়ে মনির খানকে ‘সারপ্রাইজ’ দেন রবি চৌধুরী। ওই সকল শিল্পীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মনির খান ২৫ বছরে যেসব জায়গায় ঘুরে এসেছে, সেসব জায়গায় আপনাকে পাওয়াই যাবে না। এতো হিংসা কিসের। গান গাইতে পারি এটা আল্লাহ প্রদত্ত ব্যাপার। গান গাইতে না পারলে আলু পটলের ব্যবসা করতাম। এটা নিয়ে অহংকার করার কিছু নেই। এই যে ফরিদ ভাই বসে আছেন, তিনি আমার গান করেছেন।
অনুষ্ঠানে মনির খানের সঙ্গে রবি চৌধুরী
মনির খান সম্পর্কে রবি চৌধুরী বলেন, তার সঙ্গে সম্পর্কটা আমার আপন ভাইয়ের চেয়েও বেশি। তার সরল স্বীকারোক্তি সবসময়। আমার মালিবাগের বাসায় তার গানের ক্যাসেট পাঠিয়েছিল। গান শুনলাম। তারপরেই আমি মনে হয় একমাত্র গায়ক যে তার প্রথম অ্যালবাম বের হবার পরে জড়িয়ে ধরেছিলাম। বলেছিলাম তুই একদিন অনেক বড় হবি। মনির খান আজ অনেক বড় হয়েছে। তিন তিন বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। আরো পাবে সামনে। মনির খানের এই অনুষ্ঠান ছিল মূলত কৃতজ্ঞতা স্বীকারের। আজ থেকে ২৫ বছর আগে মনির খান কিভাবে শিল্পী হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। কত ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে শিল্পী হয়েছিলেন, সেসব তুলে ধরেছেন। অকপটে বলে গেছেন খেয়ে না খেয়ে একজন মনির খানের শিল্পী হয়ে ওঠার গল্প। মনির খানের কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেছেন। মনির খান খান বলেন, ‘আমার কোনো অহংকার নেই। আমি সেইদিনের কথা ভুলে যাইনি। গ্রাম থেকে টাকা নিয়ে এসেছিলাম গানের ক্যাসেট করবো বলে। মিল্টন খন্দকার ভাই সেই টাকা ফেরত দিয়ে আসতে বলেছিলেন। আমি ফেরত দিয়ে এসেছিলাম। একজন মিল্টন খন্দকার আমার জীবনে যে কি তা বলে বোঝাতে পারবো না। তখন একটা মেসে থাকতাম, হেঁটে হেঁটে মিল্টন ভাইয়ের কলাবাগানের বাসায় যেতাম। সেসব দিন আমি ভুলিনি।’