শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন
গাজী আবুল কালাম,ইন্দুরকানী,(পিরোজপুর)প্রতিনিধিঃ
ইন্দুরকানীতে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে মায়ের স্থান হল ছেলের আলিশান বাড়িতে।ছেলের ইন্দুরকানী বাজারের প্রান কেন্দ্রে তিন তলা ভবন। অথচ মা ছিলেন ভাঙ্গা ঘরে। একটা বিছানাও ছিলনা। ঠিকমত তিন বেলা খাবারও জোটতনা না বৃদ্ধ এ মায়ের কপালে। অথচ সকল সম্পদ ছিল মায়ের।
গত দুই মাস আগে ছেলে নজরুল ইসলাম নিজের তিনতলা ভবনে পরিবার নিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছেন। কিন্তু মাকে রেখেছেন একটা ভাঙ্গা ঘরে। তিনি যে খাটটিতে ঘুমান তার নিচে ঘুমাত কুকুর। আর ঘরের চারদিকে ময়লা আবর্জনায় সয়লাবছিল এমন পরিস্থিতিতে ছিলেন ইন্দুরকানীসদরের বয়বৃদ্ধা সাফিয়া বেগম।
বৃদ্ধ সাফিয়া বেগম। দীর্ঘদিন ধরে অনাদরে অবহেলায় রোগাক্রান্ত অবস্থায় পরেছিলেন ভাংগা ঘরে।মৃত্যুর প্রহর গুনতেন সেখানে। মৃত্যুও তার কাছে আসছেনা । তাই আকাশের মালিকের দিকে তাকিয়ে সময় কেটে যায় তার।
যে ঘরটিতে তিনি থাকতেন তার মেঝেতে জমে ছিল ময়লার ভাগার।
সাপিয়ার ছোট পেটে সন্তান নজরুলে জায়গা ঠিকই হয়েছিল। কিন্তু নজরুলের আলিশান ঘরে মায়ের জায়গা ছিলনা কয়েকদিন আগেও।
স্থানীয়দের অভিযোগ নজরুল তার মায়ের অনেক সম্পদ লাভ করেছে। কিন্তু মায়ের তেমন কোন সেবাযত্ন করেন না।
নজরুলের ইন্দুরকানী থানার প্রবেশ পথে বেল তলার মোড়ে তিন তলা দালান রয়েছে। ভবনটির নিচতলায় রয়েছে তার নিজস্ব হোটেল রেস্তোরা। দ্বিতীয় তলা ভাড়া দিচ্ছেন। আর তিন তলায় তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।সরজমিনে গিয়েদেখা মেলে বৃদ্ধ সাফিয়ার, তিনি বর্তমানে ছেলের ঘরে স্থান পেয়েছেণ।
তবে সাফিয়া বেগমের শাহিদা নামের এক মেয়েও আছে। এই শাহিদা ও নজরুল দুই ভাই বোনের মধ্যে মাকে সেবা যত্ন করার বিষয়ে দ্বন্দ রয়েছে। দুই সন্তানই মায়ের সেবাযত্ন নিয়ে উদাস।
এ নিয়ে কয়েকবার স্থনীয়ভাবে শালিশ বৈঠক হওয়ার পরেও সমাধান হয়নি।
সাফিয়া বেগমের ইন্দুরকানী উপজেলা সদরে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ছিল এক সময়। দুই সন্তানের মধ্যে সে সম্পদ ভাগ করে দেয়া হয় নজরুল ভাল ভাল জমি নিয়েনেন নিজের মালিকানায় আর অবশিষ্ঠ জমি বোন শাহিদাকে দেন। এর পরে মাকে দেখ ভালের বিষয়টিও ভাগা ভাগি করে সন্তানদের মাঝে। কিন্তু সম্পদ বেশি কমের হিসাবে সেবা যত্নেরও হিসাব করেন সন্তানরা। এক পর্যায়ে কেউ আর দায়িত্ব নিলেন না বৃদ্ধ মায়ের। সরজমিনে গিয়ে জানাযা সোশাল মিডিয়ার খবর প্রকাশের পরে নজরুল মা সাফিয়াকে তার ঘরে তুলেছে গতকাল।মেয়ের কাছে জানতে চাইলে শাহিদা বলেন আমি তিন বছর পর্র্যন্ত মায়ের সেবা যত্ন করেছি। এখন নিজের খাবার জোটেনা মাকে কি খাওয়াব। এব্যাপারে নজরুলের বলেন আমি বর্তমানে কিছু ঋণগ্রস্থ্য রয়েছি তাই বোনকে বলছিলাম মাকে দেখতে কিন্তু। বোন তা মান্য করেনি।
নজরুলের মত করে আমরা দিন দিন অমানবিক হয়ে যাচ্ছি। হারাচ্ছি মানবতা। আসুন আমরা মানবিক হই। এ মায়ের পাশে দাড়াই।মায়ের পায়ের নিচে সন্তারেন বেহেস্ত এই কথাটা আমরা যেন ভুলে না যাই। নজরুলের মত করে আবার অবাধ্য সন্তানেরা মাকে ঘরে তুলে নিক এই প্রত্যাশা রইল।