শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে আরেকটি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার জন্ম নিবে ভাণ্ডারিয়ায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে রহস্য, স্বামী পলাতক বিএনপি সবসময়ই ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে -মাহমুদ হোসেন পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা
রাত নামলেই ডান্ডি নিয়ে বসে পথশিশুরা, দেখার কেউ নেই

রাত নামলেই ডান্ডি নিয়ে বসে পথশিশুরা, দেখার কেউ নেই

নয় বছর বয়সী রনি আর হোসেন (ছদ্মনাম)। দুই বন্ধুর পরিচয় বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার জংশন স্টেশনে। তারা স্টেশন, রেলগেট, মুক্তিযোদ্ধা চত্বর ও মার্কেট ঘুরে ভিক্ষা করে দিন শেষে মিলিত হয়। সন্ধ্যায় স্টেশনের নির্জন জায়গা দেখে বেশ কয়েকজন মিলে বসে লুডু খেলে ও আড্ডা দেয়। রনি থাকে মায়ের সাথে প্লাটফর্মে। হোসেন কখনো তার বাবা-মায়ের সাথে বস্তিতে আবার কখনো রাত কাটায় ওভারব্রিজে শুয়ে। তাদের দুজনের বাবা-মাও ট্রেনে ভিক্ষা করেন। বুধবার রাতে দেখা গেল, রেলওয়ের ফুটওভার ব্রিজের এক কর্নারে তারা দুজন ‘ডান্ডি’ সেবন করছে। ডান্ডি হলো এক ধরনের আঠা। মাদকসেবীরা ডান্ডি নামের এই আঠা প্রথমে পলিথিনের ভেতর ঢোকায়। এরপর পলিথিন থেকে মুখ ও নাকের মধ্য দিয়ে ভেতরে টেনে নেয়। এভাবে নেশা শেষে পলিথিন ফেলে দিয়ে চলে যায় তারা। রনি জানাল, সারাদিন ভিক্ষার যে টাকা হয় তা দিয়ে ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে রুটি বা ভাত কিনে খায়। এরপর বাকি যে টাকা থাকে তা দিয়ে লুডু খেলে ও ডান্ডি কিনে সেবন করে। প্রতিদিন সে দুটি করে আঠার কৌটা কিনে সেবন করে। হোসেন বলছিল, আমার বাবা-মা সারাদিন ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষা করে সন্ধ্যায় ফিরে আসে। যেদিন আসে না সেদিন প্লাটফর্ম বা ওভারব্রিজেই বন্ধুদের সাথে রাত কাটাই। আমার কিছুই ভালো লাগে না। সারা দিন আমিও রনির মতো ভিক্ষা করি। মানসিক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডান্ডি নামে প্রচলিত এই আঠায় অ্যারোমেটিক কম্পাউন্ড থাকে। এই আঠা সেবনে শিশুদের আচরণ ও চিন্তার আবেগকে পরিবর্তন করে। মূলত, জংশন স্টেশন এলাকার ছিন্নমূল শিশুরা ডান্ডি নামের এই মাদক সেবন করছে। এতে এসব শিশুর মস্তিষ্কের নানা বৈকল্য হয়। গত কয়েক দিন স্টেশন ঘুরে আরো দেখা যায়, রনি ও হোসেনের মতো আরও অনেক শিশু ডান্ডি নামের মাদক সেবনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। ডান্ডি সেবন করে এমন কয়েকজন শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এসব ভবঘুরে পথশিশুর কারও বাবা আছে, কিন্তু মা নেই। আবার কারও মা আছে, কিন্তু বাবা নেই। প্রায় সবাই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। বোতলসহ রাস্তায় পড়ে থাকা পরিত্যক্ত জিনিসপত্র সংগ্রহ করে তা ভাঙাড়ি দোকানে বিক্রি করে। আবার কেউ কেউ পথচারিদের হাত-পা, ব্যাগ, মেয়েদের ওড়না টেনে ধরে টাকা আদায় বা ভিক্ষাবৃত্তির করছে। অনেক শিশুরা আবার জড়িয়ে পড়েছে ট্রেনের পকেটমার চ রের সাথে। নেশার জন্য এসব শিশুরা সহজেই ডান্ডি সংগ্রহ করছে স্থানীয় সাইকেল পার্টস বা হার্ডওয়ার দোকানগুলো থেকে। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সভাপতি আলহাজ এসএম জিল্লুর রহমান জানান, বিভিন্ন উৎসবে অন্য শিশুরা যখন ঘরে মা-বাবার কাছে নিরাপদে থাকে, তখন ছিন্নমূল এসব শিশুরা রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে। তাদের বেঁচে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। আনন্দ বলে তাদের কাছে কিছু নেই। বেঁচে থাকাটাই তাদের কাছে বড় বিষয়। তাছাড়া এখানে যেসব মাদকসেবী শিশু রয়েছে তাদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। স্টেশনে অনেক শিশুই ডান্ডি নেশায় আশক্ত হয়ে পড়েছে তা প্রায় সকলেরই জানা। সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপ পরিদর্শক মোস্তফা কামাল জানান, স্টেশন এলাকায় এসব শিশুরা যেন অপকর্ম বা মাদক গ্রহণ করতে না পারে সেদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বাক্ষণিক নজর রাখা হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শরিফ উদ্দীন জানান, যেসব পথশিশুদের বাবা নেই অথবা বাবা-মা দুজনই নেই এমন শিশুদের সরকারি শিশুকেন্দ্রে রেখে লালন পালন করা সম্ভব। সেখানে ২৪ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের রাখা যায়। সান্তাহার স্টেশনের যেসব পথশিশুরা অভিভাবকহীন। তাদের তালিকা করে সরকারি শিশুকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। ফলে তারাও আরো দশটি স্বাভাবিক শিশুর মতো বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana