শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার, যার পুরনো নাম বার্মা আবারও ফিরে গেল সামরিক শাসনব্যবস্থায়। গত ৮ নভেম্বর দেশটিতে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) শতকরা ৮৫ ভাগ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছিল। মিয়ানমারের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সেই দেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। সাংবিধানিকভাবে দেশের নিম্ন ও উচ্চ কক্ষে সেনাবাহিনীর জন্য ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত আছে। এর বাইরে ইউএসডিপি নামের একটি রাজনৈতিক দল আছে, যাতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ সদস্য হতে পারে না। গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় হলে সেনাবাহিনী নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এই অজুহাত তুলে ফলাফল মানতে অস্বীকার করে। তারা নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করার জন্য অং সান সু চিকে চাপ দেয়, যা মানতে তিনি অস্বীকার করেন। নির্বাচন কমিশনও ঘোষণা দেয়, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তাও মানতে সেনাবাহিনী অস্বীকার করে। যাঁরা মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন দেশটিতে আর একটি সেনা অভ্যুত্থান অত্যাসন্ন। ঠিক তাই ঘটল ১ ফেব্রুয়ারি ভোরের আলো ফোটার আগেই। বিদেশি অনেক গণমাধ্যম এই সেনা অভ্যুত্থানকে নামকরণ করেছে পুরনো ধাঁচের সেনা অভ্যুত্থান বলে। ষাট-সত্তরের দশকে অনেক দেশে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলে সবচেয়ে এগিয়ে আছে থাইল্যান্ড। ১৯১২ সালের পর থেকে সেই দেশে প্রায় ৩৯টি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে, যার কোনোটি সফল হয়েছে আবার কোনোটি হয়নি। হাইতি, আর্জেন্টিনা, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, বলিভিয়া, ইরাক, মিসর, আফগানিস্তান, তুরস্ক, পাকিস্তান, দক্ষিণ ভিয়েতনাম, মালি প্রভৃতি দেশ সেনা অভ্যুত্থানের জন্য এক ধরনের খ্যাতি অর্জন করেছিল। এই সব অভ্যুত্থানের কোনো কোনোটি ছিল রক্তপাতশূন্য আর কোনোটি রক্তাক্ত।
মিয়ানমার ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর তাদের সেনাবাহিনী প্রথম ক্ষমতা দখল করে ১৯৬২ সালে। সেই থেকে এ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত বিরতি দিয়ে দেশটি নিয়মিত সেনাবাহিনীর দখলে ছিল। একসময় মিয়ানমার ছিল দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধিশালী দেশ। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে ছিল ভারতীয়দের ভাগ্য ফেরানোরা গন্তব্যস্থল। আমাদের বাপ-দাদারা অনেকে রেঙ্গুন আকিয়াবে যৌবন কাটিয়েছেন ভাগ্য ফেরাতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান মিয়ানমার দখল করলে তাদের অনেকেই হেঁটে এক কাপড়ে দেশে ফিরেছিলেন। কারণ মিয়ানমারের জনগণ জাপানিদের সঙ্গে মিলে তাদের দেশ থেকে ভারতীয় খেদাও কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। সেনাশাসনে একটি সমৃদ্ধিশালী দেশ কিভাবে দেউলিয়া হয়, মিয়ানমার তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তেল, গ্যাস, দামি পাথর, বনজ সম্পদ, কৃষিপণ্য, মৎস্যজাত পণ্য—কী নেই দেশটিতে? কিন্তু এসব নিয়ন্ত্রণ করে সেই দেশের সেনাবাহিনী। মিয়ানারের সেনাবাহিনী সম্ভবত বিশ্বে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সেনাবাহিনী। দুই লাখ ৬১ হাজার বর্গমাইলের দেশটির জনসংখ্যা পাঁচ কোটির সামান্য কিছু বেশি। সেই দেশে আছে সরকার স্বীকৃত ১৩৫টি ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী। এই ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর তালিকায় কয়েক শ বছর ধরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নাম নেই। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে, এরা বাঙালি এবং বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে গিয়ে সেখানে বসবাস করছে। আরাকান কখনো মিয়ানমারের অংশ ছিল না, এই ঐতিহাসিক সত্যটা তারা বুঝতে চায় না। আরাকান ছিল একজন রাজার অধীনে একটি পৃথক রাজ্য। এই রাজ্যের সীমানা দক্ষিণ চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। পরে মিয়ানমারের সঙ্গে ব্রিটিশরা আরাকান রাজ্যও দখল করে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে আরাকানের নেতৃস্থানীয় কিছু অধিবাসী ‘আরাকান মুসলিম লীগ’ নামের একটি সংগঠন করে এবং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কাছে প্রস্তাব করে, তিনি যেন আরাকান রাজ্যকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্রিটিশদের প্রস্তাব দেন। জিন্নাহ সাফ জানিয়ে দেন তাঁর কাছে এসব নতুন প্রস্তাব নিয়ে কথা বলার সময় নেই। জিন্নাহ জানতেন তাঁর ক্যান্সার হয়েছে এবং তিনি যেকোনো সময় মারা যেতে পারেন। পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য জিন্নাহর এক ধরনের তাড়াহুড়া ছিল। আরাকান যদি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হতো, তাহলে এই অঞ্চলের ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত।
এসব ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে আবার এক ডজনেরও বেশি গোষ্ঠী সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শুধু শহর অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া অন্য এলাকাগুলো এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দিয়েছে। মিয়ানমারে আরো একটি বিশ্বাস সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করে, আর তা হলো মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছাড়া কারো থাকার অধিকার নেই। আবার এই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হতে হবে চরম মৌলবাদী বৌদ্ধ, যারা থেরোবাদী বৌদ্ধ হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালে ইয়াঙ্গুনে গিয়ে বুঝেছি সেখানে যাঁরা ভারতীয় বংশোদ্ভূত জনগণ আছে তারা সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকে। এমনকি তারা রাজনীতি নিয়ে কারো সঙ্গে কথাও বলতে চায় না।
দেশটিতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফেরাতে মাঝেমধ্যে আন্দোলন হয়েছে, তবে দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে তার সব কটিই ব্যর্থ হয়েছে। যে দেশে দীর্ঘ সময় ধরে সেনাশাসন বলবৎ থাকে সেই দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে না। এই উপমহাদেশে পাকিস্তান তার একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ। ১৯৮৮ সালে মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েমের উদ্দেশ্যে প্রথম একটি বড় ধরনের আন্দোলন হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যোগ দিয়েছিলেন সব ধরনের পেশাজীবী, বুদ্ধিস্ট সন্ন্যাসী আর সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেই আন্দোলনকে সেনাবাহিনী ট্যাংক নামিয়ে দমন করে এবং তাদের এই দমন-পীড়নের কারণে প্রচুর মানুষ হতাহত হয়। তখন পর্যন্ত অং সান সু চি লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করে সেই দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময়। ইয়াঙ্গুনের এই আন্দোলনের কিছু পরে অং সান সু চি তাঁর অসুস্থ মাকে দেখতে ইয়াঙ্গুন আসেন। অং সান সু চির বাবা অং সান মিয়ানমারে জাতির জনক হিসেবে পরিচিত। কারণ তিনি ব্রিটিশদের কাছ থেকে মিয়ানমারকে স্বাধীন করতে দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু এই আন্দোলনের ফসল ঘরে তোলার আগেই ১৯৪৭ সালের ১৯ জুলাই অন্তর্দলীয় কোন্দলের শিকার হয়ে আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন। অং সান সু চি ইয়াঙ্গুনে এলে তাঁর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন নেতা দেখা করেন এবং আগামী দিনে মিয়ানমারে গণতন্ত্র কায়েম করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে তাঁকে অনুরোধ করেন। প্রথম দিকে তিনি তাতে তেমন একটা সাড়া দেননি। পরে তিনি অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজা হন এবং পরবর্তীকালে ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। খুব কম সময়ের মধ্যে এনএলডি সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
আন্তর্জাতিক চাপ ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের চাপের মুখে সেনাবাহিনী ১৯৯০ সালে দেশটিতে প্রথম একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করে, যাতে সু চির দল ৮১ শতাংশ আসনে বিজয় লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী সেই ফল মানতে অস্বীকার করে এবং অং সান সু চিকে গৃহবন্দি করে এবং নির্বিঘ্নে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশটি শাসন করে। বিশ্বের বড় বড় শক্তি ও জাতিসংঘ শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সু চি সেবারে প্রায় ১৫ বছর কারাবন্দি ছিলেন এবং সারা বিশ্বে তিনি একজন গণতন্ত্রকামী নেতা হিসেবে পরিচিত হন। বিশ্ব তাঁর ওপর এতই আস্থাবান ছিল যে ১৯৯১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৫ সালে আর একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঠিক আগের মতোই সু চির দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী কিছুতেই সু চিকে সরকার গঠন করতে দেবে না। তারা অজুহাত তোলে, সু চির স্বামী একজন বিদেশি নাগরিক। তাঁকে বাধা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনী পুনরায় সংবিধান পরিবর্তন করে আর সু চির জন্য স্টেট কাউন্সেলরের (প্রধানমন্ত্রী সমকক্ষ) পদ সৃষ্টি করে, যা সু চি মেনে নেন। সু চি আসলে ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমতালোভী, যে কারণে তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য সেনাবাহিনী যা বলেছে, তিনি তা মেনে নিয়েছেন। সেনাবাহিনী যখন আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছিল সু চি তা সমর্থন করেছেন। সেনাবাহিনীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে যখন লাখ লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তখনো অং সান সু চি বলেই চলেছেন আরাকানে কোনো নির্যাতন হচ্ছে না, রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে চলে যাচ্ছ। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের সব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক এই গণহত্যার নিন্দা জানাতে শুরু করে তখন অং সান সু চি পাত্তাই দিলেন না এই ভেবে যে সেনাবাহিনী যদি কিছু মনে করে। তাঁকে যদি আবার ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ক্ষমতাই তাঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ওআইসির উদ্যোগে গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়টি হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে উঠলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গাইতে অং সান সু চি নিজে হেগে উপস্থিত হলেন। এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। গোল বাধল গত ৮ নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল এনএলডির আবার ধস নামানো বিজয়ে। যেমনটি বলেছিলাম এই নির্বাচনে এনএলডি ৮৫ শতাংশ ভোট পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় লাভ করে। যে সেনাবাহিনী দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে তারা এই ফল কেন মেনে নেবে? তারা দাবি তোলে, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এবং তা বাতিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আর যখন সব কিছুই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, সেখানে অং সান সু চি বা তাঁর দল কিভাবে কারচুপি করে? পূর্বের ঘোষণা মতে সংসদে অধিবেশন বসার কথা ছিল ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার। তার কয়েক ঘণ্টা আগেই সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান ঘটায় আর আবার আটক হন অং সান সু চি। সেনাবাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে এবং বলে এক বছর পর তারা আর একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সেই এক বছর যে কত দিনে হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। কারণ দেশটির সেনাবাহিনীর অতীত রেকর্ড তেমন একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর সেই নির্বাচনে কি শুধু সেনাবাহিনী অংশগ্রহণ করবে। এমনটা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পক্ষে সব কিছুই সম্ভব।
বাংলাদেশ সেই ২০১৭ সাল থেকে, যখন থেকে মিয়ানমারের নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করেছে তার একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছে। কিন্তু খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে পারেনি। কারণ মিয়ানমারের বেশ কিছু বড় পরাশক্তির সমর্থন পেয়েছে। একটা আশার কথা হলো, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ চীনকে সংযুক্ত করতে পেরেছে। একটি ত্রিপক্ষীয় সভাও হয়েছে। আর একটি সভা হওয়ার আগেই ঘটে গেল সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল। যে সেনাবাহিনী আরাকানে গণহত্যা চালানোর দায়ে অভিযুক্ত সেই সেনাবাহিনী সমস্যা সমাধানে কতটুকু আন্তরিক হবে তা কোটি ডলারের প্রশ্ন। আর সু চি প্রমাণ করেছেন, ক্ষমতার রাজনীতি মানুষকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে পারে। হতে পারেন তিনি শান্তিতে নোবেলজয়ী। হিটলারও একবার নোবেলের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন। মাহাত্মা গান্ধী হয়েছিলেন পাঁচবার।
তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিজেদের অবস্থান কিছুটা ইতিবাচক করতে রোহিঙ্গা সমস্যাটার একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতেও পারে।