শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
সরাইলের শিরিনা কাজিপুরের স্বর্ণার দেয়া টাকায় স্বামীর সংসারে ফিরেছেন।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে শিরিনা আক্তার। নয় মাস আগে বিয়ে হয় তার। কথা ছিল বিয়ের পাঁচ মাস পর জামাইকে ত্রিশ হাজার টাকার ফার্নিচার কিনে দেয়ার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বিয়ের ফার্নিচার দিতে না পারায় শিরিনাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী।
শিরিনার বাবা নুর ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ ক্রণিক এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। কোনো আয়-রোজগার করতে পারে না। শিরিনার বৃদ্ধ মাতা নুরজাহান বেগম প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে কোনরকমে সংসার চালান। করোনা পরিস্থিতিতে সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী নুরজাহান বেগমেরও আয়-রোজগার বন্ধ। পরিবারের সদস্যদের দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতেই নানা কাঠখড় পুড়িয়েও কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না নুরজাহান বেগম। এ অবস্থায় মেয়ের বিয়ের উপহার ফার্নিচার কেনা তাঁর জন্য একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে মেয়েটা এসে অভাবের সংসারে পড়ে আছে, সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে নতুন বউ বাবার বাড়িতে পড়ে রয়েছে, প্রতিবেশীরা নানান কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে অসহায় শিরিনার বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় সংবাদকর্মী ও মানবিক সমাজকর্মী এম মনসুর আলী। তিনি শিরিনার মাতা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে দেখা করে তাঁর ভিডিও সাক্ষাৎকার ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে আপলোড দেন। এরই ফলশ্রুতিতে এগিয়ে আসেন সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার সোনামুখি গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী স্বর্ণা রহমান। তিনি শিরিনার নব সংসার টিকিয়ে রাখতে এবং শিরিনাকে হাসিমুখে তার স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দিতে বিয়ের উপহার কেনার জন্য নগদ ৩০ হাজার টাকা দেন।
রবিবার (১৬ আগষ্ট) দুপুরে সরাইল উপজেলার পাকশিমূল ইউনিয়ন পরিষদে স্বর্ণা রহমানের পাঠানো ত্রিশ হাজার টাকা হতদরিদ্র শিরিনা আক্তারের অসহায় বৃদ্ধ বাবা -মায়ের হাতে তুলে দেন পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ভাটিয়াঞ্চল) সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি সানাউল্লাহ ভুইয়া, সংবাদকর্মী এম মনসুর আলী, অরুয়াইল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট-এর প্রিন্সিপাল বাশার আহমেদ, ফটো সাংবাদিক ফারহান লাবিব প্রমূখ। এসময়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামও শিরিনার মা-বাবাকে কিছু অর্থ সহায়তা দেন।
প্রবাসী নারীর দেয়া নগদ অর্থ পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের শিরিনার অসুস্থ বাবা নুর ইসলাম ও বৃদ্ধ মাতা নুরজাহান বেগম দু’হাত তুলে স্বর্ণা রহমানের জন্য দোয়া করেন।
জানা গেছে, শিরিনা আক্তার দরিদ্র নুর ইসলামের তৃতীয় মেয়ে। নয় মাস আগে জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামের মৃত সাদেক মিয়ার ছেলে কুতুব মিয়ার সাথে বিয়ে হয় শিরিনা