শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
জহির সিকদার, রাহ্মণবাড়িয়াঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুঃ কোঃ লিঃ নবীনগর শাখায় শতশত গ্রাহকদের সাথে প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার দুপুরে নবীনগর পৌর এলাকার ঋষি সম্প্রদারের শতাধিক মানুষ তাদের বীমার পাওনা টাকা আদায়ের দাবীতে নবীনগর সদর পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোঃ লিঃ এর শাখা অফিস ঘেরাও করেন গ্রাহকরা।
এ সময় তারা জানান, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুঃ কোঃ লিঃ নবীনগর শাখার মাঠ কর্মি মনোয়ারা বেগমের কাছে গত ১০ বছর যাবৎ মাসের পর মাস বীমা করে এখানে টাকা জমিয়ে দুই বছর ধরে তাদের পিছু পিছু ঘুরতেছি। বীমা করানোর সময় পদ্মা লাইফ ইন্স্যুঃ কোঃ লিঃ নবীনগর শাখার জোনাল অফিসার মো. নজরুল ইসলাম ও মাঠ কর্মি মনোয়ারা আমাদের বাড়ী বাড়ী যেতেন বীমার জন্য । তাদের কথায় আমরা অনেকে বীমা ও করি বিভিন্ন মেয়াদের। বীমা যথারীতি চালানোর পর আমাদের বীমার মেয়াদ এখন পূর্ণ হয়ে গেছে। বীমার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় আমরা আমাদের বীমার শর্ত মোতাবেক টাকা দিতে বলি নবীনগর শাখা কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু শাখা কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দেওয়া সত্বে ও তারা আমাদের বীমার টাকা ফেরত দিচ্ছেনা। এখন আমাদর টাকার জন্য বারবার তাদের পিছু পিছু ঘুরতে হচ্ছে। তারা তারিখের পর তারিখ দেয় ঠিকই কিন্তু টাকা দেয়না। বীমা করোনার আগে আমাদের মধ্যে কিছু মানুষের কাছ থেকে বীমার দলীল সহ জন প্রতি ১ হাজার টাকা করে নিয়েছে টাকা দেওয়ার খরচের কথা বলে।
এ বিষয়ে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুঃ কোঃ লিঃ নবীনগর শাখার জোনাল অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, যাদের দলিল আছে তাদের টাকা দেওয়া হবে। করোনার কারনে দেশের সার্বিক পরিস্থিতী খারাপ হয়ে যাওয়ার কারনে আমাদের বীমা ব্যবসাও খারাপ অবস্থা আছে।তা ছাড়া তারা যার কাছে টাকা দিয়েছেন তিনি হলেন মনোয়ারা বেগম। তিনি আগে এখানে কাজ করতো।তার লেনদেনে সমস্যা থাকায় তাকে অফিস চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন।
মাঠ কর্মি মনোয়ারা বেগম জানান, আমি এখন পদ্মা লাইফে কাজ করিনা।আমি কাজ করার সময় সব কিছু সঠিক ভাবে জমা দিয়েছি।তাদের কাছে সব আছে! তবু তারা গ্রাহকের টাকা কেন দিচ্ছেনা তা আমার বোধগম্য নয়। আমি এখন অসুস্থ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের এক স্টাফ জানান, নবীনগর উপজেলার শতশত মানুষের প্রায় ৫১ লাখ টাকার উপরে গ্রাহকের বীমার টাকা অফিস কর্তৃপক্ষ অাটকে রেখেছেন। এ বিষয়ে উর্ধ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বললে তারা বলেন,ব্যাবসা দাও টাকা নেও।তার মানে হলো নতুন গ্রাহকদের বীমা করালে তারা পুরাতন গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করে দিবেন। কিন্তু মানুষ এখন বীমা করতে চায় না।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র এড. শিব শংকর দাস বলেন, সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ভোলাচং ঋষি পাড়ার দলিত হরিজন সম্প্রদায়ের শত শত মানুষের জমানো কষ্টের বীমার টাকা নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে তারা আসলে কেমন মানুষ।তারা লেবারী করে জুতা সেলাই করে অর্থ উপার্জন করেন। তাদের টাকার হেরফের হলে কঠিন মূল্য দিতে হবে।
নবীনগর থানার এস আই মো. আজিজ বলেন , এখানে বীমা করা এই দলিত হরিজন সম্প্রদায়ের লিষ্ট করা হচ্ছে। একটি টাকাও হেরফের করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।
এসময় ভোলাচং ঋষি পাড়ার দলিত হরিজন সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ তাদের বীমার পাওনা টাকা পাওয়ার দাবীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।